দুর্গাপুজোর চাঁদা তোলা নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ। মৃত্যু হল একজনের। আহত হয়েছেন ১৭ জন। আহতদের মধ্যে ১৫ জন পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি উত্তর ত্রিপুরার কদমতলার। দুই গোষ্ঠী মধ্যে সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ শূন্যে গুলি চালায়। উত্তেজিত জনতাকে সরাতে লাঠিচার্জও করেন পুলিশকর্মীরা।
উত্তর ত্রিপুরা জেলার পুলিশ সুপার ভানুপদ চক্রবর্তী মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, হিংসাত্মক ঘটনার পর রবিবার রাতে একটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তবে কীভাবে ওই হত্যা করা হয়েছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘আমরা হামলা ও পাল্টা হামলার পুরো ঘটনাটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করছি। রবিবারের ঘটনায় ১৫ জন পুলিশকর্মী-সহ অন্তত ১৭ জন আহত হয়েছেন। কদমতলার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বুধবার পর্যন্ত কদমতলা থানা এলাকায় ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারা জারি করা হয়েছে (এটি পূর্বতন ১৪৪ ধারার মতো)।
এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, দুর্গাপুজোর চাঁদা আদায় নিয়ে ঝামেলার সৃষ্টি হয়। এর পরই দুটি গোষ্ঠীর লোকজন একে অপরের ওপর হামলা চালায়। উত্তেজিত জনতা কয়েকটি দোকান ও বাড়ি ভাঙচুর করে। পুলিশ বেশ কয়েকবার লাঠিচার্জ করে এবং জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে শূন্যে গুলি চালায়।
বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা এবং পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। এলাকায় শান্তি ও স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনতে সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও অসম রাইফেলস মোতায়েনের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র।
এদিকে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার সমালোচনা করেছেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন। তিনি ফেসবুক পোস্টে লেখেন, মুখ্যমন্ত্রী রাত পর্যন্ত আগরতলা শহরে দুর্গাপুজোর মণ্ডপ উদ্বোধনে ব্যস্ত ছিলেন, সেই সময় কদমতলা বাজারে পুলিশের গুলিতে একজন নিহত হন এবং দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। উভয় সম্প্রদায়ের কাছে শান্তি, স্বাভাবিকতা ও সৌভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার আবেদন জানান সুদীপ রায় বর্মন।