গুয়াহাটি, ৮ জানুয়ারি – বাড়ছে একশৃঙ্গ গন্ডারের সংখ্যা। দখলদার এবং চোরা শিকারিদের দাপটে এক শৃঙ্গ গন্ডার নিশ্চিহ্ন হতে বসেছিল অসমের লাওখোয়া-বুরাচাপোরি অভয়ারণ্য থেকে। প্রায় ৪০ বছর পরে অভয়ারণ্যে ফিরে আসছে গন্ডার। সোশ্যাল মিডিয়ায় গন্ডার ফিরে আসার খবর জানিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। সেই সঙ্গে দখলদার মুক্ত করতে বন দফতরের অভিযানের প্রশংসাও করেন তিনি ।
ভারত, নেপাল, ভুটানে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে এক শৃঙ্গ গন্ডারের সংখ্যা। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি একশৃঙ্গ গন্ডার পাওয়া যায় অসমের কাজিরাঙ্গা অভয়ারণ্যে। বিশ্বের মোট একশৃঙ্গ গন্ডারের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ পাওয়া যায় কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্কে। লাওখোয়া-বুরাচাপোরি অভয়ারণ্য কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের একটি অংশ বিশেষ। ৩০৯.২ বর্গ কিলোমিটার বিস্তৃত এই অভয়ারণ্যে ১৯৮৩ সালে অন্তত ৪৫টি এক শৃঙ্গ গন্ডার ছিল। কিন্তু দখলদার এবং চোরা শিকারীদের দাপটে গন্ডারের সংখ্যা কমতে থাকে এবং অবশেষ নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।
বনভূমি পুনরুদ্ধার এবং চোরা শিকারীদের গ্রেফতার করতে পরিকল্পনা নিয়েছিল অসম সরকার। সেই মতো লাওখোয়া-বুরাচাপোরি অভয়ারণ্যে অভিযান চালানো হয় অসম বন দফতরের পক্ষ থেকে। গত বছরই দখল মুক্ত করা হয় অভয়ারণ্যটির ৫১.৭ বর্গ কিলোমিটার বনভূমি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এক বার্তায় অসমের মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘আপনারা সবাই জেনে খুশি হবেন, লাওখোয়া-বুরাচাপোরি অভয়ারণ্যে এক শৃঙ্গ গন্ডার ফিরে এসেছে। প্রায় ৪০ বছর পর ফিরেছে গন্ডার। এই অঞ্চলে সফলভাবে দখলদার এবং চোরা শিকারিদের বিরুদ্ধে অভিযানের পর, এক বছরের মধ্যে গন্ডার ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।’ এই অভিযানের জন্য বন দফতরের কর্মীদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী।
কাজিরাঙ্গার ফিল্ড ডিরেক্টর সোনালি ঘোষ জানিয়েছেন, লাওখোয়া-বুরাচাপোরি অভয়ারণ্যের সংরক্ষিত এলাকাগুলি বছরের পর বছর মানুষের দখলে ছিল। ২০২৩ সালে সেই সব এলাকা দখলমুক্ত করা হয়েছে। দখল মুক্ত হওয়ার পর সেখানে ২টি এক শৃঙ্গ গন্ডারের হদিশ মিলেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
কাজিরাঙার ফিল্ড ডিরেক্টর আরও জানিয়েছেন যে লাওখোয়া-বুরাচাপোরি অভয়ারণ্যটি বন্যপ্রাণীদের জন্য আদর্শ স্থান। তিনি বলেছেন, এখানে ১০টি বাঘ রয়েছে। এবার এক শৃঙ্গ গন্ডার ফেরায়, আগামী দিনে অভয়ারণ্যটি পর্যটকদের কাছে আকষর্ণীয় হয়ে উঠবে ।