রাষ্ট্রীয় একতা দিবসে এক দেশ, এক ভোট নীতির পক্ষে জোরদার সওয়াল করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গুজরাটের কেবারিয়া থেকে দেশের উদ্দেশে এদিন বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন তাঁর বক্তব্যে আরবান নক্সাল প্রসঙ্গও উঠে আসে। নাম না করে কংগ্রেসকে নিশানা করে তোপ দাগেন তিনি। তিনি বলেন, শহুরে নকশালদের দল সস্তা রাজনীতির স্বার্থে দেশের একতাকে নষ্ট করতে চায়। এদের চিহ্নিত করতে হবে।
কালীপুজোর দিনই সর্দার বল্লভভাই পটেলের জন্মদিবস। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গুজরাট সফরে মেলবন্ধন ঘটল দীপাবলি এবং ‘রাষ্ট্রীয় একতা দিবসে’র। শুভেচ্ছাবার্তার পাশাপাশি তাঁর বক্তৃতায় ধরা পড়ল, ‘এক দেশ এক ভোট নীতি’ এবং ‘অভিন্ন দেওয়ানি বিধি’ চালুর প্রতিশ্রুতি। পাশাপাশি ‘শহুরে নকশাল’ দের সম্পর্কেও দেশবাসীকে সতর্ক করলেন তিনি।
একতা দিবস উপলক্ষ্যে গুজরাটের কেবারিয়ায় সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের মূর্তির পাদদেশ থেকে দেশের উদ্দেশে বেশ কিছু বার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন,’ ভারত যেভাবে তার সমস্যার সমাধান করছে তা সারা বিশ্ব দেখছে। আমাদের একটা রক্ষা করতে হবে।’ একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ কিছু বিকৃত শক্তি ভারতের উত্থান নিয়ে চিন্তিত। ভারতের অভ্যন্তরে এবং বাইরেও এই প্রকৃতির লোকেরা অস্থিরতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তারা বিশ্ব বিনিয়োগকারীদের কাছে ভুল বার্তা দিতে চায়। এরা ফোর্সকে টার্গেট করছে, ভুল তথ্য প্রচার চালাচ্ছে।’
মোদী বলেন, ‘এরা জাত-পাতের নামে মানুষকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছে। তাদের লক্ষ্য ভারতের একতা ও সমাজ ব্যবস্থাকে দুর্বল করা। তারা চায় না ভারতের উন্নতি হোক। কারণ ‘দরিদ্র ভারত, দুর্বল ভারত’ রাজনীতিই তাদের জন্য উপযুক্ত। তারা সংবিধানের নামে ভারতকে বিভক্ত করছে। আমাদের শহুরে নকশালদের এই জোটকে চিহ্নিত করতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।’ মোদী আরও বলেন, ‘যে নকশালবাদ জঙ্গলে জন্মেছিল, যা যুবকদের হাতে বন্দুক ধরিয়েছিল, তা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে এবং শহুরে নকশালবাদের একটি নতুন মডেলের আবির্ভাব হয়েছে। এরা দেশ ভাঙ্গার স্বপ্ন দেখে এবং মিথ্যে মুখোশ পরে দেশের একতাকে ক্ষুন্ন করে এবং ভুল ধারণা প্রচার করে… এদের চিহ্নিত করে তাদের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে।’
এদিন ‘এক দেশ ও এক ভোট নীতি’ নিয়েও বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন,’ আমরা এখন এক দেশ এক ভোট নিয়ে কাজ করছি, যা ভারতের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে। ভারতের সম্পদের শ্রেষ্ঠ ব্যবহার হবে এবং উন্নত ভারতের স্বপ্ন পূরণে গতি আসবে । আজ, ভারত ওয়ান নেশন ওয়ান সিভিল কোড-এর দিকে এগোচ্ছে যা একটি ধর্মনিরপেক্ষ সিভিল কোড।’
এক দেশে এক আইন এবং একসঙ্গে ভোটের পক্ষে সওয়াল করে তিনি বলেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষতার শর্ত মেনে সমস্ত বৈষম্যের অবসান হওয়া উচিত। সামাজিক ঐক্যের স্বার্থে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করা প্রয়োজন।’ তাঁর মন্তব্য, “আমাদের সরকার ‘এক দেশ এক ভোট’ চালু করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” প্রধানমন্ত্রীর মতে, লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে সমস্ত বিধানসভার ভোট হলে জাতীয় ঐক্য আরও দৃঢ় হবে।