দিল্লি, ১৪ মে– মুনাফা ছাড়িয়েছে ৮১ হাজার কোটির ঘর৷ তবুও কোনও সুরাহা নেই মানুষের৷ গত অর্থবর্ষে (২০২৩-২৪) তিন রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থা— ইন্ডিয়ান অয়েল (আইওসি), ভারত পেট্রলিয়াম (বিপিসিএল) এবং হিন্দুস্তান পেট্রলিয়ামের (এইচপিসিএল) মিলিত মুনাফা নজিরবিহীনভাবে পৌঁছল ৮১,০০০ কোটি টাকায়৷ বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের নিচু দামের সুবিধা পাওয়া সত্ত্বেও কেন তারা পেট্রল-ডিজেলের দাম কমিয়ে মানুষকে সুরাহা দিল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে সর্বত্র৷ অনেকের বক্তব্য, পরিবহণ জ্বালানির দাম কমালে মূল্যবৃদ্ধির হারকেও দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা যেত৷ কিন্ত্ত রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলির মুনাফামুখী ব্যবসার ফলে সেই সুযোগও পেলেন না দেশবাসী৷
তেলের শুল্ক এবং সংস্থার লভ্যাংশে (ডিভিডেন্ড) সরকারের রাজকোষ অবশ্য ফুলেফেঁপে উঠছে৷ গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে, বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম যখন বেশি থাকে, তখন তার সিংহভাগ বোঝা সাধারণ মানুষকে গুনতে হয়৷ কিন্ত্ত তেলের দাম কমলে সেই হারে সুবিধা তাঁদের কাছে পৌঁছয় না৷ গত অর্থবর্ষেও তেমনটাই হয়েছে৷ নির্বাচন ঘোষণার ঠিক আগে লিটার প্রতি মাত্র ২ টাকা করে কমেছে পেট্রল-ডিজ়েলের দাম৷ তেল সংস্থাগুলি অবশ্য একাধিক বার বলেছে, বিশ্ব বাজারে তেল চডে় থাকার সময় সেই আঁচ যাতে সাধারণ মানুষের পকেট পর্যন্ত না পৌঁছয়, তাই প্রায় দু’বছর ধরে পরিবহণ জ্বালানির দাম স্থির রাখা হয়েছে৷ যে কারণে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ধাক্কা খেয়েছে ব্যবসা৷ কিন্ত্ত অনেকে মনে করাচ্ছেন, অতিমারির বছরেও তেল আমদানির খরচ কমায় সংস্থাগুলি কম মুনাফা করেনি৷ পাশাপাশি শুল্ক খাতে মোটা আয় করেছিল কেন্দ্র৷
রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পরে ২০২২-এর মার্চে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেল প্রতি ১৪০ ডলারে পৌঁছেছিল৷ মূলত সেই সময়ে তেল সংস্থাগুলির ব্যবসা কিছুটা ধাক্কা খায়৷ কিন্ত্ত গত বছরের এপ্রিল-সেপ্টেম্বরে প্রায় অর্ধেক দামের (৭২ ডলার) সুবিধা নিয়ে বিপুল মুনাফা করে তারা৷ পরে ব্রেন্টের দাম বেডে় ৯০ ডলার ছুঁলেও গোটা বছরের লাভ চডে়ছে৷ এখন ব্রেন্ট ঘোরাফেরা করছে ৮২ ডলারের কাছে৷