ওড়িশার পুরীতে অবস্থিত শ্রী জগন্নাথ মন্দিরের জমি নিয়ে বিরোধ ক্রমেই বাড়ছে। রাজ্য সরকার মন্দিরের জমি বিক্রি করার পরিকল্পনা করেছে। মন্দিরের পুরোহিত এবং স্থানীয় মানুষ সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে, ভগবান জগন্নাথের প্রায় ৬০,৪২৬ একর জমির মধ্যে বহু জমি দখল হয়ে গিয়েছে। সেই জমি অবৈধ দখলদারদের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি করা হবে, যার জন্য ৮,০০০ থেকে ১০,০০০ কোটি টাকা সংগ্রহের পরিকল্পনা রয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন মন্দিরের প্রধান পুরোহিত এবং স্থানীয় মানুষ। তাঁরা বিশ্বাস করেন, ঈশ্বরের জমি বিক্রি করা ঠিক নয় এবং এটি ধর্মীয় উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা উচিত, যেমন ধর্মশালা বা গোশালা। মন্দির প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত পুরোহিতরা স্পষ্ট করেছেন, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখলদারিত্বের সমাধান করা হচ্ছে। গোটা প্রক্রিয়াটি দুই দশকের পুরনো নীতির অধীনে করা হচ্ছে, যাতে ভগবান জগন্নাথের জমি নিরাপদে থাকতে পারে।
সম্প্রতি, পুরীর শ্রী জগন্নাথ মন্দিরের জমি অবৈধ দখল এবং বিক্রি সংক্রান্ত অনেক ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। মাটিটোটা এলাকার মহাবীর জনসেবা সংঘ নামে একটি সংগঠনের বিরুদ্ধে ভগবান জগন্নাথের ৬৪ একর জমির ১০৯টি প্লট অবৈধভাবে বিক্রি করার চেষ্টা করার অভিযোগ রয়েছে। এই বিষয়ে, শ্রী জগন্নাথ মন্দির প্রশাসন (SJTA) ১৬ নভেম্বর, ২০২৪ তারিখে বাসেলিসাহি থানায় একটি এফআইআর দায়ের করে। এরপর তদন্ত শুরু হয় এবং ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তথ্য অনুযায়ী, ওড়িশা সহ সাতটি রাজ্যে ভগবান জগন্নাথের মোট ৬০,৮২২ একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে ৬০,৪২৬ একর জমি ওড়িশায় অবস্থিত। এই বিতর্কের মাঝেই রাজ্যের আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ভগবান জগন্নাথের জমির অবৈধ বিক্রয় সহ্য করা হবে না। এই আইনের সঙ্গে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।