সুপ্রিম নির্দেশের পর নিট ইউজি-র সংশোধিত ফল প্রকাশ করল এনটিএ 

দিল্লি, ২৫ জুলাই – সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর প্রকাশিত হল নিট ইউজি-র সংশোধিত ফল। বৃহস্পতিবার সংশোধিত ফল প্রকাশ করে পরীক্ষার নিয়ামক সংস্থা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি বা এনটিএ। চলতি মাসের ২৩ তারিখ শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল নতুন করে আর নিট পরীক্ষা আর নেওয়া হবে না। তার পরই কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান জানিয়ে দেন, সংশোধন করে দুদিনের মাথায় নতুন ফল প্রকাশ করা হবে। সেই ফলাফলই এদিন প্রকাশ করা হয় ।

আইআইটি দিল্লির তিন সদস্যের প্যানেলের তৈরি উত্তরপত্রের ভিত্তিতে মেধা তালিকা তৈরি করা হয়েছে। কারও যদি কোনও প্রশ্ন নিয়ে সংশয় থাকে এই প্যানেল যে উত্তরপত্র নির্ধারিত করে দিয়েছে সেই সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে ধার্য করা হবে। এদিন নতুন করে ফল প্রকাশের পরই এমবিবিএস ও বিডিএস-এ কাউন্সেলিংয়ের তোড়জোড় শুরু করেছে মেডিক্যাল কাউন্সেলিং কমিটি। খুব শীঘ্রই এর জন্য রেজিস্ট্রেশন শুরু হবে। রেজিস্ট্রেশনের সময় পড়ুয়ারা পছন্দের কোর্স ও কলেজ সিলেক্ট করতে পারবেন।

নিট ইউজি-র পদার্থবিদ্যায় একটি প্রশ্নের উত্তর ঘিরে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। ওই প্রশ্নে দু’টি উত্তরই সঠিক ছিল। দুই নম্বর বিকল্প ও চার নম্বর বিকল্প, উভয়ই সঠিক হওয়ায় উভয় উত্তরেই নম্বর দেওয়া হয়েছিল। তবে মঙ্গলবার শীর্ষ আদালত বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট দেখে জানিয়ে দিয়েছে, ওই প্রশ্নে একটি উত্তরই সঠিক। চার নম্বর বিকল্পের উত্তরটিকে সঠিক বলে বিবেচনা করা উচিত বলে পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল শীর্ষ আদালত। সেই মতো বৃহস্পতিবার সংশোধিত ফল ও মেধাতালিকা প্রকাশ করল এনটিএ।


প্রসঙ্গত, যে প্রশ্নটি ঘিরে বিভ্রান্তি তৈরি হয়, সেটিতে উত্তর বেছে নেওয়ার বিকল্পগুলির মধ্যে ২ টি বিকল্প ‘সঠিক’ আসছিল। এনসিইআরটি-র দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞানের পাঠ্যবইয়ের পুরনো সংস্করণ অনুযায়ী দুই নম্বর বিকল্প ‘ঠিক’ ছিল। চার নম্বর বিকল্পটি নতুন সংস্করণ অনুযায়ী সঠিক ছিল। ফলে ওই দু’টি বিকল্পের ক্ষেত্রেই নম্বর দেওয়া হয়েছিল পরীক্ষার্থীদের। তবে মঙ্গলবার বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, চার নম্বর বিকল্পটিই সঠিক। কারণ, সেটি এনসিইআরটি-র নতুন সংস্করণের পাঠ্যবইতে উল্লেখ ছিল।

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের পরই কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান জানিয়ে দিয়েছিলেন, দু’দিনের মধ্যে নিট-ইউজি পরীক্ষার সংশোধিত ফল প্রকাশ করা হবে। সেই মতো বৃহস্পতিবার নতুন করে পরীক্ষার ফল ও মেধাতালিকা প্রকাশ করে এনটিএ ।

এদিকে নিট- পরক্ষকে ঘিরে দুর্নীতির তদন্তে নেমে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য আসছে সিবিআইয়ের হাতে। সম্প্রতি জানা গেছে, ৩৫ থেকে ৬০ লক্ষ টাকায় ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র কিনেছিলেন পড়ুয়ারা। চুক্তি ছিল, ডাক্তারিতে সুযোগ পেলে দিতে হবে আরও ২০ লক্ষ টাকা করে। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, এভাবে ১২০ থেকে ১৫০ জন পরীক্ষার্থীর কাছে গিয়েছিল এই ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র। বিহারের পড়ুয়াদের জন্য রেট বাঁধা ছিল ৩৫-৪৫ লাখ টাকায়, আর অন্যদের জন্য ৫৫-৬০ লাখ টাকা। গুজরাতের গোধরা, মহারাষ্ট্রের লাতুর, ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগ ও পাটনা-সহ দেশের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়েছিল এই প্রশ্ন। 

সিবিআই-এর দাবি , কোটি কোটি টাকার লেনদেন করা হয়েছে এই প্রশ্নপত্র কেলেঙ্কারিতে। তবে বিপুল সাবধানতা অবলম্বন করেছে অপরাধীরা। বেশিরভাগ টাকা নগদে দেওয়া হয়েছিল।  সুযোগ পেলে ২০ লক্ষ টাকা যে আরও দেওয়ার কথা ছিল, তার জন্য আগে থেকেই পোস্ট ডেটে চেক লিখে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ঘটনায় প্রচুর পাসবুক, চেক, এটিএম কার্ড বাজেয়াপ্ত করেছে সিবিআই। 

সিবিআই জানিয়েছে, এই দুর্নীতিতে এনটিএ-র কোনও ভূমিকা ছিল কিনা, থাকলেও কতটা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।