তিন মাস ধরে বেতন নেই, গণইস্তফার হুমকি রাজধানীর চিকিৎসকদের

প্রতীকী ছবি (Photo: AFP)

রাজধানীতে কোভিড সংকটের মধ্যেই গণহারে ইস্তফার হুমকি দিলেন কস্তুরবা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসকেরা (Resident doctors)। হাসপাতালটি চালায় উত্তর দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কপোরেশন (MCD)। রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের অভিযোগ, গত মার্চ থেকে তাঁদের বেতন বন্ধ। তিন মাসের বকেয়া বেতন হতে না-পেলে, তাঁরা একসঙ্গে ইস্তফা দেবেন।

বুধবারই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে ডাক্তারদের তরফে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। ১৬ জুন পর্যন্ত তাঁরা কর্তৃপক্ষকে সময় বেঁধে দেন। তার মধ্যে দাবি পূরণ না হলে, গণহারে ইস্তফা দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। সুত্রের খবর, কস্তুরবা হাসপাতালে প্রায় ১০০ রেসিডেন্ট ডাক্তার রয়েছেন।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সংগঠনের মুখপাত্র ডা. অভিমান চৌহান বলেন, ‘বেতন ছাড়া এখন বেঁচে থাকা আমাদের পক্ষে কঠিন হয়ে উঠছে।’ তাঁর কথায়, ‘তিন মাস হল। মার্চ থেকে আমরা বেতন পাচ্ছি না। কর্তৃপক্ষকে আমরা বারবার বলেছি। কিন্তু, সব প্রচেষ্টা বৃথা গেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বেতন না মেটালে, ১৬ জুন আমরা ইস্তফা দেব।’ চৌহান একজন শিশু বিশেষজ্ঞ হিসেবে এই হাসপাতালে পাঁচ বছর ধরে রয়েছে।


হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে তিনি বলেন, ‘আমরা ফ্রন্টলাইন কর্মী হওয়া সত্ত্বেও এ ভাবে অবহেলিত হব? রেসিডেন্ট ডাক্তারদের অনেকেই ক্যাম্পাসের বাইরে থাকেন। সরকারি থাকার জায়গা তাঁরা পাননি। তাঁদের বাড়িভাড়া রয়েছে। আসা-যাওয়ার একটা খরচ রয়েছে। তা ছাড়া, সকলের পরিবার রয়েছে। পরিবারের প্রতি কর্তব্য রয়েছে। কী ভাবে চালানো সম্ভব?’

কস্তুরবা হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডা. সংগীতা নাঙ্গিয়ার বক্তব্য, কর্তৃপক্ষের হাতে টাকা নেই। যে কারণে চিকিৎসকদের বেতন বকেয়া পড়েছে। হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্বে থাকা উত্তর দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কপোরেশনের কেউ এ বিষয়ে মুখ খোলেননি।

শুধু রেসিডেন্ট ডাক্তার নন, স্থায়ী চিকিৎসকেরাও মার্চ থেকে বেতন পাচ্ছেন না। দিল্লির এই কস্তুরবা হাসপাতালে ৭০ স্থায়ী চিকিৎসক রয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থায়ী ডাক্তারের বক্তব্য, আমরা বেশিকিছু বলতে পারব না। তবে, এটা ঠিক, গত মার্চ মাস থেকে আমাদেরও বেতন বন্ধ রয়েছে। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। পর্যাপ্ত ফান্ড না থাকার কথা বলা হয়েছে। আশ্বস্ত করা হয়েছে, হাতে টাকা এলেই সমস্ত বকেয়া বেতন মিটিয়ে দেওয়া হবে। তবে, নির্দিষ্ট করে কোনও সময় বলা হয়নি।

দিল্লির জামা মসজিদের কাছে ৪৫০ বেডের প্রসুতি এবং শিশু বিশেষজ্ঞ হাসপাতাল হিসেবে গড়ে উঠেছে কস্তুরবা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক জানান, উপসর্গহীন রোগীর কাছ থেকে ইতিমধ্যে এখানকার ১০ স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ডাক্তার, পিজি পড়ুয়া, নার্স সকলেই আছেন।

উত্তর এমসিডির হাসপাতালগুলিতে বেতন না পাওয়ার ঘটনা নতুন নয়। কস্তুরবা ছাড়াও হিন্দু রাও, মহর্ষি বাল্মীকি ইনফেকশাস ডিজিজেস হাসপাতাল, গিরিধারীলাল প্রসূতি হাসপাতাল ও রাজন বাবা ইনস্টিটিউট অফ পালমোনারি মেডিসিন অ্যান্ড টিউবারকিউলোসিস হাসপাতাল তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি হাসপাতালেই স্বাস্থ্যকর্মীরা দু-মাস ধরে বেতন পাচ্ছে না।