যে কোনও ব্যক্তিগত সম্পত্তি সরকার অধিগ্রহণ করতে পারে না, রায় সুপ্রিম কোর্টের 

দেশের নাগরিকদের ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে সরকারের অধিকার নিয়ে ঐতিহাসিক রায় দিল দেশের শীর্ষ আদালত।সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে নাগরিকদের সব সম্পত্তি সরকার অধিগ্রহণ করতে পারে না। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের ৯ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ এই গুরুত্বপূর্ণ রায় দেয় । সুপ্রিম কোর্ট  রায়ে স্পষ্ট জানিয়েছে, সব ব্যক্তিগত সম্পত্তি সরকার ব্যবহার করতে পারে না। সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার জন্যও সব সম্পত্তি সরকার অধিগ্রহণ করতে পারে না বলে ।

প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ছাড়া ৯ বিচারপতির বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি বিভি নাগরত্ন, বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া, বিচারপতি হৃষিকেশ রায়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা, বিচারপতি মনোজ মিশ্র,বিচারপতি রাজেশ বিন্দল, বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মা  ও বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ ম্যাসি। এরমধ্যে বিচারপতি বিভি নাগরত্ন আংশিক একমত হন এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া পুরোপুরি বিপরীত মত পোষণ করেন। নয় সদস্যের বেঞ্চে ১ জন বিচারপতি ছাড়া সংখ্যাগরিষ্ঠতার রায়ে আদালত জানায়, সংবিধানের ৩৯বি ধারা মোতাবেক জন স্বার্থে কিংবা সাধারণ মানুষের হিতের কারণে যে কোনও ব্যক্তিগত সম্পত্তি সরকার অধিগ্রহণ করতে পারে না। 

সংবিধানের ৩৯বি-অনুসারে সরকার যে কোনও সম্পত্তি ‘মেটিরিয়াল রিসোর্স’ হিসেবে অধিগ্রহণ করতে পারে, যাতে সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়। এদিন রায় ঘোষণা করতে গিয়ে সেই অনুচ্ছেদের কথা উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘৩৯বি অনুযায়ী ব্যক্তিগত সম্পত্তিও কি ‘মেটিরিয়াল রিসোর্স’-এর মধ্যে পড়ে ? এর উত্তর হ্যাঁ হলেও শীর্ষ আদালতের রায়, সব ব্যক্তিগত সম্পত্তি সর্বসাধারণের প্রয়োজনের জন্য ব্যবহার করা যায় না।’  তবে, কিছু কিছু কারণের ওপর নির্ভর করবে সম্পত্তি অধিগ্রহণ করা যাবে কি না।


১৯৭৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের সাত বিচারপতির বেঞ্চের রায় ছিল, সব ব্যক্তিগত সম্পত্তি সর্বসাধারণের জন্য ব্যবহার করা যাবে না। তবে ওই বেঞ্চের বিচারপতি কৃষ্ণ আইয়ারের বক্তব্য ছিল, সংবিধানের ৩৯বি ধারা অনুযায়ী, সরকারি ও ব্যক্তিগত সম্পত্তি মেটেরিয়াল রিসোর্সের মধ্যে পড়ে।

ব্যক্তির সম্পত্তিতে সমাজের কতখানি অধিকার রয়েছে, এই নিয়ে শীর্ষ আদালতে মামলা করেছিল মুম্বইয়ের প্রপার্টি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। এই বিষয়ে রায় দেন বিচারপতিরা। এদিনের রায়ে স্পষ্ট করা হয়, ‘ব্যক্তিগত মালিকানাধীন কোনও সম্পত্তি ৩৯ বি ধারার মধ্যে পড়ে কি না তা একাধিক প্রেক্ষাপটের উপরে নির্ভর করবে। সব ব্যক্তিগত সম্পত্তিই যে জনগণের সম্পদ হিসেবে গণ্য হবে, তা নয়।  সম্পদের প্রকৃতি, বৈশিষ্ট্য, স্থানীয় সম্প্রদায়ের উপর তার প্রভাব, সঙ্কটের দিকগুলিও বিবেচিত হবে।