দিল্লির দাঙ্গা নিয়ে উত্তাল হয়েছিল গােটা দেশ। এই মামলায় প্ররােচনাকারী হিসেবে দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে সিপিআইএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, অর্থনীতিবিদ জয়তী ঘােষ, যােগেন্দ্র যাদবের নাম চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে।
রবিবার দিল্লি পুলিশ দাবি করে, জেরা করে তাদের নাম পাওয়া গিয়েছ। সেকারণেই এই মামলায় সীতারাম ইয়েচুরিদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযুক্ত হিসেবে নয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এদিন কেন্দ্রকে চঁচাছােলা ভাষায় আক্রমণ করেন সীতারাম ইয়েচুরি। রীতিমত সাংবাদিক বৈঠক করে সিপিএমের এই শীর্ষ নেতা বলেন, “আমাদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। দিল্লি পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন। এরাই চক্রান্ত করছে। আমার নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে শুনিনি। কে চার্জশিট লিক করল? আমরা জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। ফলে আমাদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই।”
এখানেই থেমে থাকেননি সীতারাম ইয়েচুরি। তাঁর আরও সংযােজন, বিজেপি যেভাবে দেশের সংবিধান ধ্বংসের চেষ্টা করছে আমরা কোনও ভাবেই তার সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করব না। এটা আমাদের কর্তব্য। যারা হিংসাত্মক কথা বলে দাঙ্গায় উস্কানি দিয়েছিলেন, যেখানে কেন্দ্রের মন্ত্রীরা শামিল ছিলেন, তাদের দিল্লি পুলিশ ছেড়ে রেখেছে। আর যারা শান্তি-সম্প্রীতির কথা ওখানে বলেছেন, তাদেরও অভিযুক্ত করা হচ্ছে। দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর চেয়ে হাস্যকর আর কিছু হতে পারে না। পুলিশ দাঙ্গার তদন্ত করছে। পুলিশ তদন্ত করছে কারা সিএএ বিরােধী প্রতিবাদ করেছে। এবং এই চার্জশিট পরিকল্পিতভাবেই ফাঁস করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদিকেও এদিন নিশানা করেছে সীতারাম ইয়েচুরি। সিপিএমের এই শীর্ষ নেতার অভিযােগ, ‘মােদি সরকার মহামারির মােকাবিলা না করে দেশকে ভয়াবহ আর্থিক সঙ্কটের দিকে ঠেলে দিয়েছে। ধ্বংস করা হচ্ছে সংবিধান। এই সংবিধানকে ধ্বংস করে অর্থনীতিকে ধ্বংস করা হচ্ছে। আমজনতার ওপর আক্রমণ নামিয়ে আনা হচ্ছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে ২৩ থেকে ২৬ তারিখের মধ্যে দাঙ্গায় ৫৩ জনের মৃত্যু হয় এবং ৫৮১ জন আহত হন। মৃত ও আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৯৭ জনের শরীরে বন্দুকের গুলির ক্ষত ছিল।
এই দাঙ্গার ঘটনায় প্রথমে সীতারাম ইয়েচুরিদের নাম চার্জশিটে না থাকলেও পরে জানা যায়, সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে এই নামগুলি যুক্ত করেছে দিল্লি পুলিশ। ভিম আর্মির প্রধান চন্দ্রশেখর, ওমর খালিদ সহ বেশ কিছু নেতার নামও রয়েছে। এদিকে দিল্লি পুলিশ দাবি করেছে, জেএনইউ-এর ছাত্রী দেবাঙ্গনা ও ছাত্র মহেশ নারােয়াল, তারা স্বীকার করেছে যে পরােক্ষভাবে তারা হিংসার সঙ্গে জড়িত ছিল। অধ্যাপক জয়তী ঘােষ, অপূর্বা নন্দরাও তাদের মদত দিয়েছিল ও সাহস যুগিয়েছিল বলে দিল্লি পুলিশের দাবি।