• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিলেন নীতিশ কুমার, ফিরলেন এনডিএ জোটে

পাটনা, ২৮ জানুয়ারি: সমস্ত জল্পনার অবসান। ভেঙে গেল বিহারের জেডিইউ ও আরজেডি-র নেতৃত্বে তৈরি ‘মহাগঠবন্ধন’ সরকার। আজ রবিবার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিলেন জেডিইউ-এর সর্বভারতীয় সভাপতি নীতীশ কুমার। আজ সকালে রাজ্যপাল রাজেন্দ্র আরলেকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। নীতিশ কুমার পদত্যাগের সময় রাজ্যপালকে ‘মহাগঠবন্ধন’-এর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছেন। পাশাপাশি, নীতীশ কুমারকে

পাটনা, ২৮ জানুয়ারি: সমস্ত জল্পনার অবসান। ভেঙে গেল বিহারের জেডিইউ ও আরজেডি-র নেতৃত্বে তৈরি ‘মহাগঠবন্ধন’ সরকার। আজ রবিবার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিলেন জেডিইউ-এর সর্বভারতীয় সভাপতি নীতীশ কুমার। আজ সকালে রাজ্যপাল রাজেন্দ্র আরলেকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। নীতিশ কুমার পদত্যাগের সময় রাজ্যপালকে ‘মহাগঠবন্ধন’-এর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছেন।

পাশাপাশি, নীতীশ কুমারকে ফের সরকার গড়তে সমর্থন জানিয়েছেন বিজেপি বিধায়করা। আজ দুপুরে নীতিশ কুমারের নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠনের সেই প্রস্তাবপত্র পাঠানো হয়েছে রাজভবনে। এর কিছুক্ষণ পরেই ফের রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে সরকার গড়ার প্রস্তাব রাখেন জেডিইউ প্রধান নীতীশ কুমার সহ বিজেপি, হাম ও নির্দল বিধায়করা। সব কিছু ঠিক থাকলে রবিবার ছুটির দিনেই নতুন সরকার গঠিত হবে। আজই এনডিএ নেতৃত্বাধীন সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন নীতিশ কুমার।

সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই তাঁর দল জেডি(ইউ) এবং বিজেপির মধ্যে ক্ষমতা বন্টনের চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের জন্য বিহারে আসন ভাগাভাগিও চূড়ান্ত করেছে দুই দল। বিহারের নতুন মন্ত্রিসভায় নীতীশের জোট সরকারে উপমুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন বিজেপি নেতা সম্রাট চৌধুরী ও বিজয় সিনহা। তার আগে, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী আজ সকালে পাটনায় তাঁর বাসভবনে জেডি(ইউ) বিধায়কদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ডেকেছিলেন। বৈঠক চলাকালীন, বিধায়করা তাঁকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

এদিকে বিহারে জেডিইউ সহ অন্য দলের সঙ্গে জোট বেঁধে এনডিএ সরকার গড়ার প্রস্তাব পাশ করলেন বিজেপি বিধায়করা। বিজেপি বিধায়কদের দলনেতা হিসেবে সম্রাট চৌধুরীকে নির্বাচিত করা হয়েছে। নীতীশ কুমারকে ফের সরকার গড়তে সমর্থন জানিয়েছেন বিজেপি বিধায়করা। আজ দুপুরে নীতিশ কুমারের নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠনের সেই প্রস্তাবপত্র পাঠানো হয়েছে রাজভবনে।

আজ পদত্যাগের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নীতীশ কুমার বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে সরকার ভেঙে দিলাম। এই বিষয়ে আমি সবদিক থেকে মতামত নিয়েছি। এর আগে এনডিএ ছেড়ে নতুন জোট তৈরি করেছিলাম। কিন্তু ওই জোটে সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল না। তাই আমি পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিলাম। এরপর জেডিইউ ও অন্য দলের বিধায়কেরা পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’ নীতিশ কুমার এতদিন পর আজ ইন্ডিয়া জোট নিয়েও সরব হন। তিনি বলেন, ‘আমি অনেক চেষ্টা করেছিলাম সবাইকে এক ছাতার তলায় আনতে। কিন্তু ওই জোটে কেউ কারও কথা শুনছে না।’

প্রসঙ্গত তিনি ঘন ঘন রাজনৈতিক ইউ-টার্নের জন্য পরিচিত, এনডিএ ত্যাগ করেছিলেন এবং ২০২২ সালে সরকার গঠনের জন্য RJD-এর নেতৃত্বাধীন মহাগঠবন্ধনে (মহাজোট) যোগ দিয়েছিলেন। গত দশ বছরে নীতিশ কুমার এই নিয়ে চতুর্থ বার জোট বদল করলেন। এর আগে ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি মোদিকে ‘প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী’ ঘোষণা করার পরে প্রতিবাদ জানিয়ে এনডিএ জোট ছেড়েছিলেন নীতীশ। কিন্তু সেই লোকসভা ভোটে একা লড়ে হার হয় জেডিইউ-র। এরপর ২০১৫-র বিধানসভা ভোটে আরজেডি এবং কংগ্রেসের সঙ্গে মহাজোট গড়ে জয়ী হন তিনি। কিন্তু লালুপ্রসাদ পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফের ২০১৭-য় বিজেপির সঙ্গে হাত মেলান তিনি ।

২০২০-র বিধানসভা ভোটে তুলনায় কম আসন পেয়েও নীতীশের ফের মুখ্যমন্ত্রী হওয়া অবধি বিজেপি-জেডিইউ জোটে সমস্যা বাড়ছিল। কখনও জাতপাত-ভিত্তিক জনগণনা, কখনও সিএএ, কখনও ‘বিহারের সন্ত্রাসের রমরমা’ নিয়ে প্রকাশ্য সমালোচনায় মেতেছেন দু’দলের নেতারা। ২০২০ সালে বিহারের বিধানসভা ভোটে বিজেপির সঙ্গে লড়ে জিতলেও ২০২২ সালের আগস্টে এনডিএ ছেড়ে বিহারে আরজেডি-কংগ্রেস-বামেদের সমর্থন নিয়ে ‘মহাগঠবন্ধন’ সরকার গড়েছিলেন নীতীশ। এবার ২০২৪-এর জানুয়ারি ফের শিবির বদল করলেন জেডিইউ প্রধান।