গত অর্থবর্ষে বিদেশি লগ্নি কমে ৬২.১৭%, আক্রমণ বিরোধীদের
দিল্লি, ২৮ মে– কেন্দ্রে মোদি সরকার আসার পর থেকেই গেরুয়া শিবিরের দাবি দেশের অর্থনীতিকে নতুন মান দিয়েছে মোদি সরকার৷ যদিও বিরোধীরা অবশ্য অর্থনীতির বিভিন্ন পরিসংখ্যান তুলে ক্রমাগত কেন্দ্রের উদ্দেশে আক্রমণ শানিয়ে চলেছে৷ অন্যদিকে, গত এক দশকে মোদি সরকার কেন্দ্রীয় বাজেটের ধারণাই বদলে দিয়েছে বলে মন্তব্য করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন৷ তাঁর দাবি, অতীতে বাজেট ছিল স্রেফ আয়-ব্যয়ের হিসাব৷ এখন সরকারের আয় কী ভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঢালা হচ্ছে, তার একটা স্পষ্ট দিশা ফুটিয়ে তোলা হয়৷ আর বাজেটে স্বচ্ছতা বাড়লে আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ) এবং বিশ্ব ব্যাঙ্কের মতো আর্থিক সংস্থাগুলির কাছেও ইতিবাচক ভাবমূর্তি গডে় ওঠে৷ সংশ্লিষ্ট মহলও বলছে, নির্মলা আর্থিক নিয়মানুবর্তিতার দাবি করলেও গত কয়েক বছরে মূল্যায়ন সংস্থাগুলি ভারতের ঋণযোগ্যতা (মূল্যায়ন) বাড়ায়নি৷ তাতে কেন্দ্রও একাধিক বার ক্ষোভ প্রকাশ করেছে৷
কেন্দ্রের নানা ইতিবাচক অর্থনীতির উন্নতি নিয়ে নির্মলার দাবি, অতীতে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার রাজকোষ ঘাটতিকে বিভিন্ন ভাবে ঢেকে রাখার চেষ্টা করত৷ তার মধ্যে বাজেট বহির্ভুত ধার এবং অয়েল বন্ড ছিল অন্যতম৷ আর মোদী সরকার গুরুত্ব দিয়েছে বাজেটের বিশ্বাসযোগ্যতায়৷ তিনি লিখেছেন, ‘সাধারণ মানুষের থেকে সংগ্রহ করা প্রতিটি টাকার ন্যায্য এবং কার্যকরী খরচ করেছি আমরা৷ তার স্বচ্ছ হিসাবও পেশ করেছি৷’
আর নির্মলার এই বার্তা শোনার পরই ফুঁসে উঠেছে বিরোধী শিবির কংগ্রেস৷ কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সাকেত গোখলে অবশ্য এক্স-এই ভারতের সাম্প্রতিক বাণিজ্য ঘাটতি সংক্রান্ত সংবাদমাধ্যমের খবর তুলে ধরে মোদি সরকারকে তুলেধনা করতে ছাড়েনি৷ যেখানে বলা হয়েছে, গত (২০২৩-২৪) অর্থবর্ষে ১০টি বৃহত্তম বাণিজ্যিক সহযোগীর (চিন, রাশিয়া, ইরাক, সৌদি আরব, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, হংকং, সিঙ্গাপুর এবং আমেরিকা) মধ্যে ন’টির সঙ্গেই ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি বেডে়ছে৷ চিনের সঙ্গে তা পৌঁছেছে ৮৫০ কোটি ডলারে৷ ওয়াশিংটনকে পিছনে ফেলে বেজিং হয়ে দাঁডি়য়েছে দিল্লির বৃহত্তম বাণিজ্য সহযোগী৷ তাদের সঙ্গে বাণিজ্যের অঙ্ক ১১,৮৪০ কোটি ডলার ছুঁয়েছে৷ ভারতের একমাত্র বাণিজ্য উদ্বৃত্ত আমেরিকার সঙ্গে৷
সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তোপ দেগেছেন, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ভারতে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি এসেছিল ২৭৯৮ কোটি ডলার৷ গত অর্থবর্ষে তা-ও ৬২.১৭% কমে ১০৫৮ কোটি ডলার কমেছে৷
ভারতের বাণিজ্য পরামর্শদাতা সংস্থা জিটিআরআইয়ের শীর্ষ কর্তা অজয় শ্রীবাস্তব বলছেন, ‘বাণিজ্য ঘাটতি বাড়লে ভারতীয় মুদ্রা দুর্বল হবে৷ কারণ, আমদানির খরচ মেটাতে বেশি দিতে হবে বৈদেশিক মুদ্রা৷’