দিল্লি বিধানসভা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পরেই আপ সরকারের দায়ের করা সমস্ত মামলা খতিয়ে দেখা শুরু করেছে আইনমন্ত্রক। দিল্লির নতুন সরকার ওই সব মামলা প্রত্যাহার করতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানাতে পারে। কারণ, ওই সব মামলা চালানোর আর কোনও যৌক্তিকতা নেই। কারণ কেন্দ্রে এবং দিল্লিতে বিজেপিরই সরকার রয়েছে। ফলে এইসব মামলা আর চালানোর কোনও যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছে না কেন্দ্র।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভারতীয় জনতা পার্টি ২৭ বছর পর দেশের রাজধানী দিল্লিতে ক্ষমতায় ফিরে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং তাঁর দলকে পরাজিত করা বিজেপি বিরোধী বিরোধীদের জন্য একটি বড় ধাক্কা। এদিকে আপের জমানায় আপের দায়ের করা মামলা লড়তে বহু ব্যয় করেছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় সরকার এবং সেখানকার লেফটেন্যান্ট গভর্নরের বিরুদ্ধে প্রাক্তন আপ সরকারের দায়ের করা এইসব মামলা এবার খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে আইনমন্ত্রক। সূত্রের খবর, আপের দায়ের করা ওই সমস্ত মামলা লড়তে কেন্দ্রের ব্যয় হয়েছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। দিল্লিতে বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতার পর নতুন সরকার ওই সমস্ত মামলা প্রত্যাহার করতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের আইনমন্ত্রক মামলাগুলি নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছে।
আইনমন্ত্রকের একটি সূত্রের দাবি, আপ সরকারের দায়ের করা মামলাগুলি লড়তে কোটি কোটি টাকা যেমন খরচ হয়েছে তেমনই নষ্ট হয়েছে কাজের সময়। বেশির ভাগ মামলা দায়ের হয় ২০২২ সালে দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর হিসেবে ভি কে সাক্সেনা দায়িত্ব গ্রহণের পর। লেফটেন্যান্ট গভর্নরের ক্ষমতা, যমুনার দূষণ রোধে লেফটেন্যান্ট গভর্নরের নেতৃত্বে গড়া উচ্চ পর্যায়ের কমিটির বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করেছিল তৎকালীন আপ সরকার।
কেন্দ্রীয় সরকারের উচ্চ পদস্থ এক আধিকারিক জানান, দিল্লির নতুন সরকার ওই সব মামলা প্রত্যাহার করতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানাতে পারে। কারণ, ওই সব মামলা চালানোর আর কোনও যৌক্তিকতা নেই। যেহেতু কেন্দ্রে ও দিল্লিতে বিজেপির সরকারই থাকবে, তাই মামলা প্রত্যাহার করতেও সময় লাগার কথা নয়।
অতিরিক্ত মুখ্য সচিব পর্যায়ের সমস্ত আধিকারিক, সমস্ত প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি ও সেক্রেটারিকে আইনমন্ত্রক বিভাগীয় নির্দেশ দিয়ে জানিয়েছে, আপ সরকারের আমলে করা সব মামলার বিস্তারিত নথিপত্র পাঠাতে। কোন মামলার কতদূর এগিয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট আদালত কোন মামলায় কী রায় দিয়েছে, তার বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করতে হবে। তারপরেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে নতুন সরকার।
দিল্লিতে ৩৩ মিলিয়নেরও বেশি লোক বাস করে এবং জাতীয় রাজধানী দিল্লিতে এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে বিজেপির নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। রাজনৈতিক বিশ্লেষক রশিদ কিদওয়াই এক সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘দিল্লি একটি ছোট ভারত, এখানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যা রয়েছে এবং বিজেপি দেখিয়েছে যে তারা যদি দিল্লি জিততে পারে তবে তারা যে কোনও কিছু জিততে পারে।’