মণিপুরের পরিস্থিতি বর্তমানে খুবই উত্তেজনাপূর্ণ। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অশান্ত রয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতের এই রাজ্য। এরই মধ্যে মণিপুরে রাজনৈতিক ডামাডোল শুরু হল। বীরেন সিং সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করেছে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)।
এনপিপি-র বক্তব্য, বীরেন সরকার হিংসা-বিধ্বস্ত মণিপুরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাকে লেখা চিঠিতে এনপিপি দাবি করেছে, গত কয়েকদিনে মণিপুরের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। বহু নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।
৬০ সদস্যের মণিপুর বিধানসভায় এনপিপির ৭ জন বিধায়ক রয়েছে। ফলে এনপিপি-র সমর্থন প্রত্যাহার বীরেন সরকারের জন্য কোনও পার্থক্য করবে না কারণ এনডিএ-র মোট বিধায়ক সংখ্যা ৫৩। এর মধ্যে, বিজেপি বিধায়কের সংখ্যা ৩৭। দলের বিধায়কদের পাশাপাশি নাগা পিপলস ফ্রন্ট (এনপিএফ)-এর কাছে পাঁচজন, একজন জেডিইউ এবং তিনজন নির্দল বিধায়কের সমর্থন রয়েছে।
অন্যদিকে, বিরোধী দলগুলির মধ্যে, কংগ্রেসের পাঁচজন এবং কেপিএ-র দু’জন বিধায়ক রয়েছে। এর আগে, জাতিগত হিংসার পরিপ্রেক্ষিতে কুকি পিপলস পার্টি (কেপিএ) রাজ্যের এনডিএ সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করেছিল।
হিংসা-বিধ্বস্ত মণিপুরে কী কারণে ফের হিংসা ছড়িয়ে ছড়াল? শনিবার রাতে জিরিবাম জেলায় তিন মহিলা ও তিন শিশুকে হত্যা করেছে জঙ্গিরা। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ১৬ নভেম্বর মণিপুরের তিন মন্ত্রী ও ছয়জন বিধায়কের বাড়িতে হামলা চালায় সাধারণ মানুষ। তাঁদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয়। মন্ত্রী ও বিধায়কদের গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। এর পর থেকে রাজ্যের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ৭ জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রবিবার মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে একটি পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শীর্ষ আধিকারিকদের উত্তর-পূর্ব রাজ্যে শান্তি নিশ্চিত করতে সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। রবিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মহারাষ্ট্রে তাঁর সমস্ত সমাবেশ বাতিল করে হঠাৎ নাগপুর থেকে দিল্লিতে এসেছিলেন। দিল্লিতে আসার পর, শাহ মণিপুরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করেন।