কেন্দ্রের ছুটির তালিকায় আরেকটি দিন বৃদ্ধি পেল। আগামী ১৪ এপ্রিল বাবাসাহেব আম্বেদকরের জন্মদিন উপলক্ষ্যে জাতীয় ছুটি ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় সরকার। শুক্রবার কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে জানিয়েছেন, সমাজ এবং সংবিধানের প্রতি তাঁর অবদানকে শ্রদ্ধা জানাতেই কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত।
সম্প্রতি সংসদে আম্বেদকরকে নিয়ে তুমুল বাকবিতণ্ডায় জড়িয়েছে বিজেপি ও কংগ্রস। অমিত শাহের একটি বক্তব্যকে তুলে ধরে কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি ও আরএসএস অন্যতম সংবিধান প্রণেতাকে অসম্মান করেছে। কংগ্রেসের এই অভিযোগের পাল্টা দিতে ছাড়েনি বিজেপি। কংগ্রেসকে বিঁধতে আম্বেদকরের লেখা এবং আরও নানা নথি উদ্ধৃত করে বিজেপি অভিযোগ করেছিল, কংগ্রেসই বরাবর বাবাসাহেব ভীমরাও আম্বেদকরকে অপমান করেছে। ওই তরজার ঘটনা মুখ খুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। এর পরে ২৮ মার্চ, কেন্দ্রের তরফে আম্বেদকরের জন্মদিনে জাতীয় ছুটি ঘোষণা করা হলো। এতদিন বিভিন্ন রাজ্য আম্বেদকরের জন্মদিন উপলক্ষ্যে তাদের নিজেদের উদ্যোগে আলাদা করে ছুটি ঘোষণা করত।
আম্বেদকরের জন্মদিনে কেন্দ্রের ছুটি ঘোষণাতে অবশ্য সুবিধা আদায়ের রাজনীতিই দেখছে রাজনৈতিক মহল। কেননা এই বছরেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। এই ২ রাজ্যেই উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় তফসিলি জাতি ও তফসিলি জনজাতির ভোটার রয়েছে। তফসিলি জাতি ও তফসিলি জনজাতির কাছে বাবাসাহেব ভীমরাও আম্বেদকারের স্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর জন্মদিনে জাতীয় ছুটি ঘোষণা করে কেন্দ্র সেই সমস্ত তফসিলি জাতি ও তফসিলি জনজাতির কাছে সহানুভূতি আদায়ের পথ প্রস্তুত করল।
উল্লেখ্য, ১৮৯১ সালের ১৪ এপ্রিল মধ্যপ্রদেশের মহৌতে একটি দলিত পরিবারে জন্ম ভীমরাও রামজি আম্বেদকারের। সামাজিক ন্যায় এবং সাম্য প্রতিষ্ঠা, সমাজের প্রান্তিক শ্রেণির অধিকারের জন্য আম্বেদকার পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের আইনজীবী হিসেবে আজীবন লড়াই করে গিয়েছেন। ন’টি ভাষায় দক্ষ আম্বেদকার প্রথম ভারতীয় যিনি ডক্টরেট পেয়েছিলেন। স্বাধীন ভারতের প্রথম আইন ও বিচারমন্ত্রীও তিনি। ১৯৫৬ সালের ৬ ডিসেম্বর আম্বেদকারের মৃত্যু হয়। তাঁকে মরণোত্তর ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত করে কেন্দ্র।