মণিপুর থেকে প্রথম বিচারপতি হিসেবে সুপ্রিম কোর্টে পা রাখছেন এন কোটিশ্বর সিং

দিল্লি, ১৬ জুলাই: গোষ্ঠী সংঘর্ষ ও দাঙ্গায় বিধ্বস্ত মণিপুর। বারবার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী থেকে শুরু করে তৃণমূল ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলি সংসদ ভবনকে উত্তাল করে দিয়েছেন। দেশজুড়ে রাজনৈতিক আলোচনার শিরোনামে থাকা সেই মণিপুর এবার দেশের শীর্ষ আদালতকে এক বিচারপতি উপহার দিল। মণিপুরের ভূমিপুত্র ওই বিচারপতির নাম এন কোটিশ্বর সিং। তিনিই প্রথম বিচারপতি, যিনি মণিপুর থেকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হলেন। ফলে এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতির সংখ্যা আরও দুইজন বাড়ল। অন্য আর একজন বিচারপতি হলেন আর মহাদেবন। তিনি মাদ্রাজ হাইকোর্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি।

প্রসঙ্গত সম্প্রতি এই দুই বিচারপতিকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করার সুপারিশ করে দেশের শীর্ষ আদালতের কলেজিয়াম। সেই সুপারিশে সিলমোহর পড়ে। ফলে নতুন এই দুইজন বিচারপতিকে নিয়ে দেশের শীর্ষ আদালতে মোট বিচারপতির সংখ্যা বেড়ে হল ৩৪ জন। যার মধ্যে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ও রয়েছেন। তবে দেশের শীর্ষ আদালতে স্থান পাওয়া মণিপুরের এন কোটিশ্বর সিং-কে নিয়ে যথেষ্ট চর্চা শুরু হয়েছে দেশজুড়ে। বিশেষ করে এই রাজ্য গত বেশ কয়েক মাস ধরে গোষ্ঠী সংঘর্ষ ও দাঙ্গা বিধ্বস্ত হওয়ার জন্য এন কোটিশ্বর সিং-কে নিয়ে আলোচনা যেন বেশি মাত্রা পেয়েছে।

জানা গিয়েছে, বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিং-এর জন্ম ১৯৬৩ সালের ১ মার্চ। মণিপুরের ইম্ফলে। তাঁর বাবা এন ইবোতোম্বি সিং-ও ছিলেন একজন বিচারপতি। তিনি গুয়াহাটি হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। একসময় মণিপুরের প্রথম অ্যাডভোকেট জেনারেলও হয়েছিলেন। এদিকে সদ্য সুপ্রিম কোর্টে মনোনীত হওয়া বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিং-এর স্কুলজীবন কেটেছে এই বাংলাতে। পুরুলিয়ার রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠে পড়াশোনা করেছেন তিনি। এরপর ১৯৮৩ সালে কিরোরি মাল কলেজ থেকে স্নাতক ও ১৯৮৬ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি পাশ করেন। ওই বছরেই আইনজীবী হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়। তিনি দেশের একাধিক রাজ্যের হাইকোর্টের বিচারপতির দায়িত্বভার সামলেছেন। তিনি মণিপুর থেকে সুপ্রিম কোর্টের প্রথম বিচারপতি হয়ে রেকর্ড গড়লেন। নিজের রাজ্যের নাম উজ্জ্বল করলেন। নাম উঠল ইতিহাসের পাতায়।


অন্যদিকে, মাদ্রাজ হাইকোর্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আর মহাদেবন ১৯৬৩ সালের ১০ জুন তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন। মাদ্রাজ ল কলেজ থেকে তিনি আইন পাশ করে আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর ২০১৩ সালে মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত হন। এবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হলেন।