আইজল, ২৩ জানুয়ারি – মিজোরামের বিমানবন্দরে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হল মায়ানমার সেনার এক বিমান। বিমানটি মিজোরামে আশ্রয় নেওয়া মায়ানমারের সৈন্যদের ফিরিয়ে নিয়ে যেতে এসেছিল বিমানটি। মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারি সকাল ১১টায় বিমানটি রানওয়েতে নির্দিষ্ট জায়গায় থামতে পারেনি। বিমানটিতে পাইলট-সহ মোট ১৩ জন ক্রু সদস্য ছিলেন। তাঁদের মধ্যে অন্তত ৮ জন গুরুতর আহত হন। তাদেরকে লেংপুই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দুপুরে মিজোরামের লেংপুই বিমানবন্দরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মায়ানমার সেনার বিমানটি । তাতে মোট ১৪ জন যাত্রী ছিলেন। সূত্রের খবর, অবতরণের সময় রানওয়েতে পিছলে যায় শিংশি ওয়াই এইট বিমানটি। সঙ্গে সঙ্গে সেটি দু’টুকরো হয়ে যায়। মিজোরামের এই বিমানন্দরের রানওয়েটি টেবিল টপ প্রকৃতির।সেখানে বিমান অবতরণে দক্ষতা থাকা দরকার । সেখানেই অবতরণের সময়ই দুটুকরো হয়ে যায় টাটমাদাও-এর বিমান।
সম্প্রতি মায়ানমারে বিদ্রোহীদের তীব্র আক্রমণের মুখে পড়ে মায়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্যরা দলে দলে ভারতে অনুপ্রবেশ করতে শুরু করেছেন । মণিপুর, মিজোরাম-সহ সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে আশ্রয় নিচ্ছেন তাঁরা । এর মধ্যে মায়ানমার সেনার ১৮৪ জন সদস্যকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ভারত। তারই অংশ হিসেবে এই সেনাদের সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল মায়ানমার।
গৃহযুদ্ধে ছত্রভঙ্গ মায়ানমারে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের লড়াই ক্রমেই বাড়ছে। মায়ানমারের উত্তর-পশ্চিমে সাগাইং প্রদেশে সরকারি বাহিনী ও পিডিএফের মধ্যে এই সংঘর্ষ বহুদিনের। ফৌজের আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন কয়েক হাজার গণতন্ত্রকামী। সেনাশাসন শেষ করতে তীব্র যুদ্ধ চালাচ্ছে বিদ্রোহী বাহিনী। প্রাণ বাঁচাতে বহু মানুষ আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতে ।
অসম রাইফেলের বিবৃতি অনুযায়ী, মায়ানমারের ২৭৬ জন সেনা ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। এর মধ্যে ১৮৪ জনকে সোমবার ফেরত পাঠায় অসম রাইফেলস। বাকিদের ফেরাতে মিজোরামে এসেছিল বিমানটি।
মিজোরাম-মণিপুরে আশ্রয় নিচ্ছে পালিয়ে আসা কুকি-চিন গোষ্ঠীর মানুষ। শুরুর দিকে জুন্টার পাল্লা ভারী থাকলেও ক্রমে শক্তিবৃদ্ধি করছে বিদ্রোহীরা। ক্রমশ কোণঠাসা হচ্ছে দেশটির সামরিক বা জুন্টা সরকার। কয়েকদিন আগেই প্রতিবেশী দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস’ মায়ানামার সেনার দুটি ঘাঁটি দখল করে ফেলে। এর পরই সেখান থেকে প্রচুর সেনা পালিয়ে মিজোরামে আশ্রয় নেয়।