১৮ বছর ধরে কংগ্রেস সদস্য থাকার পরে মঙ্গলবার আচমকাই দল ছেড়েছে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। তাঁর পিসি তথা বিজেপি বিধায়ক যশােধরা রাজে সিন্ধিয়া বুধবার বলেন, জ্যোতিরাদিত্য খুব বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। তাঁর বিজেপি’তে আসা ‘ঘর ওয়াপসি’ বলে দাবি করেন যশােধরা। কয়েক দশক আগে তিনি নিজে যােগ দিয়েছিলেন বিজেপি’তে। এদিন সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা পাগল নই। মানুষ অকারণে এত বড় পদক্ষেপ নেয় না।
মাধবরাও সিন্ধিয়া বাদে অতীতে সিন্ধিয়া পরিবারের অনেকে যােগ দিয়েছেন বিজেপি’তে। ওই পরিবারের দু’জন, যশােধরা রাজে সিন্ধিয়া ও বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া অতীতে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছে। যশােধরা এদিন বলেন, আমার মা বিজয়রাজে ছিলেন মহারানি। মানুষ তাঁকে সম্মান করত। দ্বারকাপ্রসাদ মিশ্র নামে এক নেতার জন্য তিনি কংগ্রেস ছাড়তে বাধ্য হন। দ্বারকাপ্রসাদ তাঁর কথা শুনতেন না। তাঁকে সম্মান দিতেন না। খুব দুঃখের সঙ্গে তিনি কংগ্রেস ছেড়েছিলেন।
জ্যোতিরাদিত্যর কংগ্রেস ছাড়া নিয়ে তিনি বলেন, কয়েক মাস ধরেই মনে হচ্ছিলচ, সে আর কংগ্রেসে থাকবে না। পরে তিনি বলেন, বিজেপির কাছে আমার ভাইপাের নিশ্চয় মূল্য আছে। না হলে তারা তাকে দলে নিত না।
৪৯ বছর বয়সী জ্যোতিরাদিত্যের সম্পর্কে অভিযােগ, তিনি ব্যক্তিগত স্বার্থে কংগ্রেস ছেড়েছেন। এসম্পর্কে প্রশ্ন করলে যশােধরা বলেন, ব্যক্তিস্বার্থ ছাড়া এখনকার দিনে কে রাজনীতি করে? আজ থেকে কিছু বছর আগে রাজনীতি যেমন ছিল এখন তেমন নেই। তখন রাজনীতি করা মানে ছিল দেশ গঠন করা।
বুধবারই বিজেপিতে যােগ দিচ্ছেন দলত্যাগী কংগ্রেস নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। তাঁকে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী করা হয়নি বলে তিনি দলের ওপরে অসন্তুষ্ট ছিলেন। কমলনাথ সরকারের যদি পতন হয়, বিজেপি তাঁকে সম্ভবত মুখ্যমন্ত্রী করবে না। একটি সূত্রে খবর, তাঁকে মধ্যপ্রদেশ থেকে কোনও রাজ্যসভা আসনে জিতিয়ে আনা হতে পারে। পরে তাঁকে কেন্দ্রে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার সিন্ধিয়া পদত্যাগ করার পরেই মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের ২২জন বিধায়ক রাজ্যপালের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ অবশ্য বলছেন, তিনি ক্ষমতায় টিকে যাবেন। কিন্তু রাজ্যপাল যদি ২২জন বিধায়কের পদত্যাগ গ্রহণ করেন, তাহলে কংগ্রেস সরকার নিশ্চিতভাবেই গরিষ্ঠতা হারাবে। এই পরিস্থিতিতে বুধবার কংগ্রেস ও বিজেপি, উভয় দলই বিধায়কদের সরিয়ে ফেলেছে। বিজেপি’র বিধায়করা আছে গুরগাঁওয়ের পাঁচ তারা আইটিসি গ্র্যান্ড ভারত হােটেলে। কংগ্রেস তার বিধায়কদের নিয়ে গিয়েছে রাজস্থানের জয়পুরে।