এই রাজ্যে মুসলিমদের থাকতে হলে দিতেই হবে বিবাহ, বিচ্ছেদ রেজিস্ট্রেশন

নতুন আইনে লাভ জেহাদে যাবজ্জীবন 

এবার মুসলিম বিবাহ ও বিবাহ বিচ্ছেদ রেজিস্ট্রেশন আনতে চলেছে অসম সরকার। বুধবারই অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানান, শীঘ্রই রাজ্য সরকারের তরফে নতুন একটি বিল আনা হবে। বসন্ত অধিবেশনে এই বিল আনা হবে, যেখানে মুসলিমদের বিবাহ ও বিবাহ বিচ্ছেদের রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করা হবে। এই আইনের প্রস্তুতি যে অনেক আগেই শুরু করেছে অসম সরকার তা বলার অপেক্ষা রাখে না।  চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেই অসম সরকার বাতিল করেছিল সংখ্যালঘু বিবাহ এবং বিচ্ছেদ নথিভুক্তিকরণ আইন (১৯৩৫)। এ বার তার পরিবর্তেই আসতে চলেছে নয়া বিল। যদিও বিরোধীদের দাবি, পরোক্ষে রাজ্যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার লক্ষ্যে এমন পদক্ষেপ করতে চলেছে অসমের বিজেপি সরকার। বাল্যবিবাহ রুখতে ‘কুখ্যাত’ অভিযান চালানো হয়েছিল অসমজুড়ে। গ্রেপ্তার করা হয়েছিল প্রায় সাড়ে ৩ হাজার জনকে। এই ঘটনায় অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচারের অভিযোগ এনেছিল বিরোধী দলগুলি। এবার অসমের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, রাজ্যে বাল্যবিবাহ রুখতে মুসলিম বিবাহ রেজিস্ট্রশন বাধ্যতামূলক করবেন তিনি। সেই মর্মে একটি আইনের খসড়াও তৈরি করা হয়েছে।

অসমের মন্ত্রিসভায় অসম কমপালসরি রেজিস্ট্রেশন অফ ম্যারেজ এন্ড ডিভোর্স বিল নামের ওই বিলটির খসড়া প্রস্তাবে সায় দেওয়া হয়েছে। বিধানসভার বসন্তকালীন অধিবেশনে ওই বিলটি পেশ করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছেন, এই বিলটি আইনে পরিণত হলে সমস্ত মুসলিম বিবাহ রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। সেই রেজিস্ট্রেশন মুসলিম বিবাহ আইনে কোনও কাজির কাছে হবে না। রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে স্পেশ্যাল ম্যারেজ অ্যাক্টে।


হিমন্তের দাবি, আইনটি কার্যকর হলে সে রাজ্যে বাল্যবিবাহ বন্ধ হবে। পাশাপাশি তিনি আরও জানান, শীঘ্রই বিবাহের নামে ধর্মান্তরণের প্রচেষ্টা (লাভ জেহাদ) রুখতে আরও একটি আইন আনার কথা ভাবছে রাজ্য। দোষী প্রমাণিত হলে যাবজ্জীবন কারাবাসের বিধান থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া আন্তঃর্ধমীয় জমি হস্তান্তর রোধেও দ্রুত পদক্ষেপ করবে সরকার।

হিমন্ত জানিয়েছেন, নতুন আইনে সব বিয়ে রেজিস্ট্রার করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু ১৮ বছরের কমবয়সী কারও বিবাহ রেজিস্ট্রার করা যাবে না। সরকারি সূত্র বলছে, এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে মূলত বাল্যবিবাহ বন্ধ করা এবং সমস্ত বিবাহকে আইনসিদ্ধ করার জন্য।

হিমন্ত আরও জানিয়েছেন, এটা প্রাথমিক ধাপ। আগামী দিনে উত্তরপ্রদেশের ধাঁচে অসমেও লাভ জেহাদ রুখতে কড়া আইন আনা হবে। তাতে লাভ জেহাদে দোষী প্রমাণিত হলে যাবজ্জীবন কারাবাসের আইন থাকবে। এখানেই শেষ নয়, আগামী দিনে ভিনধর্মে জমি বিক্রি বা দান করা রুখতেও নতুন আইন আনা হবে।