খুন এক সাংবাদিক,  ছেলের কাটা মাথা কোলে নিয়ে রাস্তায় বসে মা- যোগীরাজ্যে প্রশ্নের মুখে প্রশাসন 

ফের দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হতে হল এক সাংবাদিককে। বুধবার রাতে উত্তরপ্রদেশের ফতেপুর জেলায়  দিলীপ সাইনি নামের এক সাংবাদিককে ছুরি মেরে খুন করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, সাংবাদিকের বাড়িতে ঢুকে তাঁর ওপর হামলা  করে দুষ্কৃতীরা। ওই সাংবাদিকের বাড়িতে ছিলেন তাঁর বন্ধু। তিনি বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের নেতা। এই হামলার ঘটনায়  গুরুতর আহত হন তিনিও। তাঁর নাম শাহিদ খান। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এই ঘটনার সঙ্গে করা যুক্ত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আহত হন শাহিদ এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

শাহিদ খান জানিয়েছেন, তাঁরা একসঙ্গে বসে রাতের খাবার খাচ্ছিলেন। সেই সময়ে একটি ফোন আসে। সাইনি ফোনে যখন কথা বলছিলেন তখনই হঠাৎ কয়েকজন ঘরে ঢুকে পড়ে। তারা ছুরি দিয়ে ওই সাংবাদিককে কোপাতে শুরু করে। সাংবাদিকের বন্ধু তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতরভাবে জখম হন। তাঁকেও আক্রমণ করেছিল দুষ্কৃতীরা। কিন্তু তিনি কোনও ভাবে প্রাণে বেঁচে যান। দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় পথেই ওই সাংবাদিকের মৃত্যু হয় বলে পুলিশসূত্রে খবর।

স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রায় ১৬ থেকে ১৭ জন মিলে সাইনির বাড়িতে হামলা চালায়। পুলিশ জানতে পেরেছে, এদের মধ্যে কয়েকজনকে তাঁরা চিনলেও বাকি কাউকে চিনতেন না। অনুমনা করা হচ্ছে, দুষ্কৃতীরা লোক ভাড়া করে আনতে পারে এই কাজের জন্য। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে , ফতেপুর এবং লখনউয়ে কিছু সম্পত্তি ছিল সাংবাদিক দিলীপের। সেই নিয়ে কোনও দ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা ঘটতে পারে।   


ঠিক কী কারণে এই খুনের ঘটনা ঘটল তা স্পষ্ট নয়। অনুমান করা হচ্ছে পারিবারিক কোনও বিবাদের জেরেই খুন হতে হল ওই সাংবাদিককে । 

সাংবাদিক খুনের পাশাপাশি জমি বিবাদের করুণ পরিণতি দেখা গেল যোগিরাজ্যে। দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হতে হল তরতাজা এক কিশোরকে।  এর পরের ঘটনা স্বপ্নেও কল্পনা করা কঠিন। তরতাজা সেই ছেলের কাটা মুণ্ডু কোলে নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে রইলেন সেই যুবকের মা। চার দশকের বেশি সময় ধরে জমি নিয়ে বিবাদ চলছিল দুই পরিবারের। গত বুধবার সেই ঝামেলা চূড়ান্ত আকার ধারণ করে। তার জেরে দিনে-দুপুরে তলোয়ার দিয়ে নৃশংসভাবে মাথা কেটে হত্যা করা হল এক কিশোরকে।  বুধবার মাঝ রাস্তায় শিউরে ওঠার মতো ঘটা এই ঘটনার সাক্ষী রইল উত্তরপ্রদেশের জৌনপুর।

পুলিশ সূত্রে খবর, জৌনপুর শহরের কাছে গৌড়বাদশাপুর থানার অন্তর্গত কাবিরুদ্দিন গ্রামের একটি জমি নিয়ে ১৭ বছর বয়সী কিশোর অনুরাগ যাদবের বাবা রামজিৎ যাদবের সঙ্গে দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে বিবাদ চলছিল অন্য একটি পরিবারের। এদিন সেই বিবাদ চরমে ওঠে। সেই বিবাদের মাশুল গুনতে হয় অনুরাগকে। বুধবার দুপুরে রাস্তা দিয়ে আসার সময় অনুরাগকে ধাওয়া করে দুষ্কৃতীরা। বছর সতেরোর অনুরাগকে তাড়া করে ধরে ফেলে তারা। এরপর দুষ্কৃতীরা তলোয়ারের কোপে অনুরাগের মাথা কেটে ফেলে। এরপর তারা পালিয়ে যায়। রাস্তায় এমন দৃশ্য দেখে পথচারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তাঁরাই পুলিশে খবর দেন। গোটা এলাকা জুড়ে হৈচৈ বেঁধে যায়।  ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। তত ক্ষণে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় অনুরাগের পরিবার। তার মা এসে দেখেন পুত্রের ধড় এবং মাথা রাস্তায় দু’দিকে পড়ে আছে। কিন্তু ছেলের এই পরিণতি কিছুতেই মানতে রাজি হননি মা। মৃতের মা ছেলের মাথাটি কোলে নিয়ে সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে রইলেন। কিছুতেই তার কোল থেকে ছেলের মাথা সরাতে পারছিল না পুলিশ।  এমন দৃশ্য দেখে চোখের জল বাঁধ মানেনি কারোরই।

জৌনপুরের পুলিশ সুপার অজয় পাল শর্মা জানিয়েছেন, অনুরাগের বাবার সঙ্গে ৪০-৪৫ বছর ধরে জমি নিয়ে বিবাদ চলছিল। সেই বিবাদের জেরেই কিশোরকে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। এই ঘটনায় রমেশ এবং লাল্টা নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরা কেউ ওই নাবালককে খুন করেনি, কিন্তু সঙ্গে ছিল। যে খুন করেছে সে এখন পলাতক। ধৃতদের জেরা করে একদিকে যেমন তার খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে, তেমনি আর কারা এই ঘটনায় জড়িত তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।