মহারাষ্ট্রের অন্যতম বড় প্রকল্প সমৃদ্ধি মহামার্গ সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত। এর শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে, যা ১৫ দিনের মধ্যে শেষ হবে। ইগতপুরী থেকে মুম্ই পর্যন্ত ৭৬ কিলোমিটারের কাজ চলছে। এটি ৭০১ কিলোমিটার দীর্ঘ মহাসড়কের শেষ পর্যায়। শীঘ্রই এর উদ্বোধন করতে পারেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস। এই হাইওয়ে মুম্বই এবং নাগপুরের মধ্যে যাতায়াতের সময় ১৬ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে 8 ঘণ্টায় আনবে। এই হাই স্পিড এক্সপ্রেসওয়েকে মহারাষ্ট্রের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য একটি গেম চেঞ্জার হিসেবে ধরা হচ্ছে।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের স্বপ্নের প্রকল্প এটি। তিনি এই প্রকল্পটি সম্পূর্ণ করার জন্য মহারাষ্ট্র রাজ্য সড়ক উন্নয়ন কর্পোরেশন ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডঃ অনিল কুমার বলিরাম গায়কওয়াড়কে বিশেষ দায়িত্ব দেন। অনিল শ্রেষ্ঠ ইঞ্জিনিয়র পুরস্কার এবং জাতীয় গর্ব পুরস্কারে সম্মানিত। অনেক বড় প্রকল্পও সময়ের আগেই শেষ করেছেন তিনি। এই প্রকল্পের পাশাপাশি, তিনি বান্দ্রা-ভারসোভা সি লিঙ্ক, থানে ক্রিক ব্রিজ এবং মুম্বই-পুনে এক্সপ্রেসওয়ে মিসিং লিঙ্কের মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে কাজ করছেন।
সমৃদ্ধি মহামার্গের বিশেষত্ব – এই ৭০১ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ৬ লেনের মহাসড়কটি দেশের সবচেয়ে হাই-টেক এক্সপ্রেসওয়ে। প্রতি ঘণ্টায় যানবাহনের সর্বোচ্চ গতি হতে পারে ১৫০ কিলোমিটার। ৬৫টি ফ্লাইওভার,২৪টি ইন্টারচেঞ্জ, ৬টি টানেল রয়েছে। এছাড়া ৩০টি জ্বালানী স্টেশন, ২১টি অ্যাম্বুলেন্স থাকছে। রয়েছে ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ হাই-টেক টুইন টানেল, যা জার্মান প্রযুক্তিতে সজ্জিত। বন্যপ্রাণী সুরক্ষার জন্য ১০০টিরও বেশি করিডোর তৈরি করা হয়েছে, যাতে বন্যপ্রাণীরা নিরাপদে এক্সপ্রেসওয়ে পার হতে পারে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে মহারাষ্ট্রের ১০টি জেলা সরাসরি যুক্ত হচ্ছে এবং ১৪টি জেলা পরোক্ষ সংযোগ পেয়েছে। ১৮টি নতুন স্মার্ট টাউন গড়ে তোলা হবে। এর ফলে স্থানীয় শিল্প ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া পরিবহন খরচ কমবে এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত হবে। গত দুই বছরে, ১.৫২ কোটি যানবাহন সমৃদ্ধি হাইওয়েতে ভ্রমণ করেছে, টোল হিসাবে ১১০০ কোটি টাকা আয় হয়েছে। এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে হিন্দু হৃদয়সম্রাট বালাসাহেব ঠাকরে সমৃদ্ধি মহামার্গ।
সমৃদ্ধি মহামার্গ ভারতের প্রথম হাইওয়ে, যেটি প্রতি ঘণ্টায় 150 কিমি গতির জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এই মহাসড়কটি ১০০ বছর স্থায়ী হওয়ার জন্য উচ্চ মানের কংক্রিট দিয়ে তৈরি। এই হাইওয়েতে এক্সিট টোল নীতি প্রযোজ্য। প্রবেশের জন্য কোনও টোল চার্জ করা হবে না। আপনার ভ্রমণের দূরত্ব ইলেকট্রনিকভাবে রেকর্ড করা হবে এবং প্রস্থানের সময় প্রতি কিমি চার্জ করা হবে।