দিল্লি, ১৪ জানুয়ারি – ১৫ মার্চের মধ্যেই মলদ্বীপ থেকে সমস্ত ভারতীয় সেনা প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিলেন সেই দেশের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, মলদ্বীপের রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের পাবলিক পলিসি সেক্রেটারি আবদুল্লাহ নাজিম ইব্রাহিম বলেছেন, “ভারতীয় সামরিক কর্মীরা মলদ্বীপে থাকতে পারবেন না। এটাই রাষ্ট্রপতি ড. মহম্মদ মুইজ্জু এবং তাঁর প্রশাসনের নীতি “. সম্প্রতি লাক্ষাদ্বীপ-মলদ্বীপ বিতর্কের সৃষ্টি হলেও, মলদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি নতুন নয়। নির্বাচিত হওয়ার পরই তিনি ভারতীয় সৈন্যদের মলদ্বীপ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এর প্রায় দুই মাস পর সেনা প্রত্যাহারের জন্য ভারতকে সময়সীমা বেঁধে দিল মলদ্বীপ প্রশাসন।
‘ইন্ডিয়া আউট’ এই নীতি সামনে রেখেই ক্ষমতায় আসেন মুইজ্জু। তিনি বলেন, “মলদ্বীপের মাটিতে কোনও বিদেশি সেনা না থাকাটা আমাদের দেশকে নিশ্চিত করতে হবে”। মুইজ্জুর এই ঘোষণার পিছনে চিনের প্রচ্ছন্ন মদত রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই। কারণ ভারত-মলদ্বীপ বিতর্ক শুরু হলে প্রথমে সুর নরম ছিল মলদ্বীপ সরকারের। ভারত এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগে সাসপেন্ডও করা হয়েছিল মলদ্বীপের তিনজন মন্ত্রীকে। তার পরেও অবশ্য দুই দেশের সম্পর্ক খুব একটা সহজ হয়নি।
‘চিনপন্থী’ বলে পরিচিত মুইজ্জু গত সপ্তাহেই পাঁচ দিনের জন্য চিন সফরে যান। সফরের তৃতীয় দিনে জিনপিংয়ের সঙ্গে রাজধানী বেজিংয়ে বৈঠক করেন মুইজ্জু। সেখানেই ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতের সময়ে মলদ্বীপের পাশে থাকার আশ্বাস দেন চিনের প্রেসিডেন্ট । তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ওই বৈঠকে বেজিংকে তাঁদের ‘পুরনো বন্ধু এবং নিকটতম সহযোগী’ বলেন মুইজ্জু।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই ভারতকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে মুইজ্জু বলেন, ‘‘আমাদের দেশের মাটি থেকে সমস্ত বিদেশি সেনাকে আমারা ফেরত পাঠাব।’’ এ ক্ষেত্রে মুইজ্জু নাম না-করলেও স্পষ্ট ভাবেই ভারতকে নিশানা করেন। কারণ, ভারত মহাসাগরের ওই দ্বীপরাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক এবং শিল্পক্ষেত্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল ভারতীয় সেনা। পরে কূটনৈতিক স্তরেও ভারতকে সেনা সরানোর বার্তা দেয় মলদ্বীপ।
পাঁচদিনের চিন সফর সেরে শনিবারই ফিরেছেন মুইজ্জু । তার পরই তিনি বলেন , ”আমরা ছোট হতে পারি। কিন্তু সেজন্য আমাদের ধমকে চমকে দাবিয়ে রাখার লাইসেন্স কাউকে দেব না ।আমরা একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। তাই, মলদ্বীপের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে না গলানোর অধিকার কোনও দেশের নেই।” কারও নাম না করলেও তিনি যে ভারতের উদ্দেশে এই কথা বলেছেন তা পরিষ্কার। এই হুঁশিয়ারির পরের দিনই সেনা সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করল মলদ্বীপ।