জমি বিবাদের পরিণতি যে এক মা’কে দেখতে হবে তা কেউ স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারে না। যুবক পুত্রের কাটা মুণ্ডু কোলে নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকলেন সেই মা। চার দশকের বেশি সময় ধরে জমি নিয়ে বিবাদ চলছিল দুই পরিবারের। গত বুধবার সেই ঝামেলা চূড়ান্ত আকার ধারণ করে। তার জেরে দিনে-দুপুরে তলোয়ার দিয়ে নৃশংসভাবে মাথা কেটে হত্যা করা হল এক কিশোরকে। বুধবার মাঝ রাস্তায় শিউরে ওঠার মতো ঘটা এই ঘটনার সাক্ষী রইল উত্তরপ্রদেশের জৌনপুর।
উত্তরপ্রদেশ পুলিশ সূত্রে খবর, সে রাজ্যের জৌনপুর শহরের কাছে গৌড়বাদশাপুর থানার অন্তর্গত কাবিরুদ্দিন গ্রামের একটি জমি নিয়ে ১৭ বছর বয়সী কিশোর অনুরাগ যাদবের বাবা রামজিৎ যাদবের সঙ্গে দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে বিবাদ চলছিল অন্য একটি পরিবারের। এদিন সেই বিবাদ চরমে ওঠে। সেই বিবাদের মাশুল গুনতে হয় অনুরাগকে। এদিন, দুপুরে রাস্তা দিয়ে আসার সময় অনুরাগকে ধাওয়া করে দুষ্কৃতীরা। বছর সতেরোর অনুরাগকে তাড়া করে ধরে ফেলে তারা। এরপর দুষ্কৃতীরা তলোয়ারের কোপে অনুরাগের মাথা কেটে ফেলে। তারপর তারা পালিয়ে যায়। রাস্তায় এমন দৃশ্য দেখে পথচারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তাঁরাই পুলিশে খবর দেন। গোটা এলাকা জুড়ে হৈচৈ বেঁধে যায়। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। তত ক্ষণে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় অনুরাগের পরিবার। তার মা এসে দেখেন পুত্রের ধড় এবং মাথা রাস্তায় দু’দিকে পড়ে আছে। কিন্তু ছেলের এই পরিণতি কিছুতেই মানতে রাজি হননি মা। মৃতের মা ছেলের মাথাটি কোলে নিয়ে সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে রইলেন। কিছুতেই তার কোল থেকে ছেলের মাথা সরাতে পারছিল না পুলিশ। এমন দৃশ্য দেখে চোখের জল বাঁধ মানেনি কারোরই।
জৌনপুরের পুলিশ সুপার অজয় পাল শর্মা জানিয়েছেন, অনুরাগের বাবার সঙ্গে ৪০-৪৫ বছর ধরে জমি নিয়ে বিবাদ চলছিল। সেই বিবাদের জেরেই কিশোরকে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। এই ঘটনায় রমেশ এবং লাল্টা নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরা কেউ ওই নাবালককে খুন করেনি, কিন্তু সঙ্গে ছিল। যে খুন করেছে সে এখন পলাতক। ধৃতদের জেরা করে একদিকে যেমন তার খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে, তেমনি আর কারা এই ঘটনায় জড়িত তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।