দিল্লি, ৬ মার্চ– দুই প্রধানমন্ত্রী বিষয় কিন্তু এক৷ উপহার৷ কিন্তু আকাশ-পাতাল পার্থক্য তাদের কাজে৷ একদিকে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অন্যদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷
তোষাখানা অর্থাৎ উপহার বেচে দেওয়া মামলা নিয়ে কম মুখ পোড়েনি পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের৷ এমনকী তাকে ইতিমধ্যে জেলেও যেতে হয়েছে৷ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন দেশ-বিদেশ থেকে পাওয়া দামি উপহার তিনি নিজের ব্যক্তিগত কাজে লাগিয়েছেন, বেচেও দিয়েছেন অনেক কিছু৷ ঠিক তার বিপরীতে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷\
সরকারি সূত্র বলছে, বিভিন্ন জায়গা থেকে পাওয়া নানান উপহার বেচে ১৫০ কোটি দেশের সেবায় দিয়েছেন৷ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে পাওয়া বিভিন্ন উপহার সামগ্রী নিলামে বিক্রি করে দেড়শো কোটি টাকা আয় হয়েছে দেশের৷ সেই টাকা গঙ্গা শোধন প্রকল্পে ব্যয় করেছে ভারত সরকার৷ তবে মোদী নতুন নন, এটাই ভারতের প্রচলিত ব্যবস্থা৷ প্রধানমন্ত্রী-সহ মন্ত্রীরা সরকারি অনুষ্ঠান বা রাষ্ট্রীয় সফরে গিযে যে সব উপহার সামগ্রী পান সেগুলি সরকারের তোষাখানায় জমা করে দিতে হয়৷
প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর দেশ সেবার নির্দশন হিসাবে এই প্রচলিত ব্যবস্থাকেই এবার হাতিয়ার করলেন৷ তেলেঙ্গানা সফরে রাজ্যের কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি প্রধানমন্ত্রীকে সোলার তৈরি একটি দামি উপহার দিয়েছেন৷ পরে বিজেপির সভায় উপহারের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী তাঁর উদারতা, দানধ্যানের অভ্যাসের কথা তুলে ধরেন৷ বলেন, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে এই সব উপহার নিলাম করে পাওয়া অর্থ গরিব ছাত্রদের পড়াশুনোর খরচ মেটাতেন৷
তবে হঠাৎ করে মোদির এই উপহার প্রসঙ্গ সরকারি স্তরে জানানোয় রাজনীতিই দেখছে রাজনীতিক মহল৷ কারণ তিনদিন আগে পাটনার জনসভা থেকে আরজেডি নেতা লালু প্রসাদ যাদব প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে বলেছিলেন, ‘আপনি কথায় কথায় বিরোধী নেতাদের পরিবারবাদী বলে গালমন্দ করেন৷ রাজনৈতিক পরিবারের ছেলেমেয়েদের রাজনীতিতে আসা কি অন্যায়? আপনি নিঃসন্তান তো আমরা কী করব৷ লালুপ্রসাদের ওই মন্তব্যকে বিজেপি গোটা দেশে মোদির মহিমা কীর্তনে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷
অন্যদিকে, মোদি বলেছেন, দেশের ১৪০ কোটি নাগরিক আমার পরিবারের সদস্য৷ সেই সঙ্গে সরকারি তোষাখানায় জমা হওয়া উপহার সামগ্রী বিক্রি করে অর্জিত অর্থ সরকারি কোষাগারে দানকে নিজের উদারতা, সেবাকাজ বলে চালাতে চেয়েছেন৷ যদিও অতীতে সব প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রীরাও একই নিয়নে উপহার সামগ্রী তোষাখানায় জমা করেছেন, এখনও করেন৷ নিয়ম হল, ওই সব সামগ্রী কোনও মন্ত্রী নিজের কাছে রাখতে চাইলে সরকার নির্ধারিত দাম দিয়ে কিনে নিতে হয়৷