• facebook
  • twitter
Wednesday, 2 April, 2025

ব্যাঙ্ককে মোদী- ইউনূস দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সম্ভবত হচ্ছে না

জানাল জানাল বিদেশ মন্ত্রক

ফাইল চিত্র

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককে বিমসটেকের শীর্ষ সম্মেলন চলাকালীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সম্ভবত হচ্ছে না। শুক্রবার বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতিতে একথা জানানো হয়েছে। মোদী শুধু থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শীর্ষ সম্মেলনের মাঝে আগামী ৩ এপ্রিল থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার সঙ্গে মোদী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে পর্যালোচনা করবেন। সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদী যাতে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন , সেজন্য বাংলাদেশ সরকার ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানিয়েছিল। 

 
নরেন্দ্র মোদী বিমসটেকের বৈঠকে যোগ দিতে থাইল্যান্ড যাচ্ছেন ৩ এপ্রিল। পরের দিন তিনি ব্যাঙ্কক থেকে চলে যাবেন শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনূঢ়া কুমারা দিশানায়কের আমন্ত্রণে মোদী সেই দেশে সফর করবেন ৪ থেকে ৬ এপ্রিল। এদিকে ইউনূসের চিন সফরের সময়ই এই বার্তা দেওয়া হল বিদেশ মন্ত্রকের তরফে। বেজিং থেকে ঢাকায় ফিরেই ইউনূস থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককে যাবেন বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে। বিদেশ মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ব্যাঙ্ককে মোদীর সঙ্গে পার্শ্ববৈঠকে বসার ইচ্ছাপ্রকাশ করে ইউনূসের পাঠানো বার্তায় সম্ভবত সাড়া দিচ্ছে না সাউথ ব্লক। দ্বিপাক্ষিক বৈঠক না হলেও ব্যাঙ্ককে ইউনূসের সঙ্গে মোদীর কিছু সময়ের জন্য সৌজন্যমূলক সাক্ষাত হবে কিনা সেই বিষয়ে সরকারি বিবৃতিতে কোনও উল্লেখ নেই।
সরকারি সূত্রে খবর, দুই দেশের রাষ্ট্রনেতা একই সম্মেলনে থাকায় দুইজনের মধ্যে অবশ্যই সৌজন্য বিনিময় হবে। নিভৃতে দুই নেতার মধ্যে কিছু আলাপচারিতাও হতে পারে। তবে তা আনুষ্ঠানিক এবং সৌজন্যমূলক। তবে সেটিও হবে এই দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে প্রথম সাক্ষাত।
বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণ করেন গত বছরের আগস্ট মাসে। সেপ্টেম্বরে  রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বার্ষিক সম্মেলনে দুই প্রধানের দেখা হয়নি। অন্যদিকে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীপদে ইস্তফা দিয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতেই রয়েছেন, যা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পদাধিকারীরা দিল্লিকেই নিশানা করেছেন। পাশাপাশি, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ধারাবাহিক ঘটনাও ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছে।  তাই ব্যাঙ্ককে আদৌ মোদী-ইউনূস বৈঠক হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে কূটনীতিকদের অনেকের মনেই।
 
ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, ব্যাঙ্ককে শীর্ষ সম্মেলনের সময় মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করতে চান ইউনূস। সেই সঙ্গে মুখ্য উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পরে প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফরের জন্য ইউনূসের চিনকে বেছে নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ‘চিন সফর চূড়ান্ত করার অনেক আগে প্রধান উপদেষ্টা ভারতে যেতে চেয়েছিলেন। সেই ইচ্ছা প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকার গত ডিসেম্বরেই ভারতকে বার্তা পাঠিয়েছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ভারত থেকে ইতিবাচক কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।’
 
বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসার পর ইউনূসকে মোদী অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। গত ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষেও অভিনন্দন জানিয়ে ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন মোদী। কিন্তু দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়নি।