দিল্লি, ১০ জুন– খালিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিংহ নিজ্জরের খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত-কানাডার সম্পর্ক দিনে দিনে অবনতি ঘটছিল৷ কিন্তু মোদির তৃতীয় জমানায় সেই সম্পর্কের উন্নতি ঘটতেই দেখা গেল৷ মোদির সরকার গঠনের পথ প্রশস্ত হতেই তাঁকে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো৷ রবিবার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার পর মোদি ট্রুডোকে ধন্যবাদ জানিয়ে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করেন৷ একই সঙ্গে কানাডার সঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে ইতিবাচক মন্তব্যও করেন মোদী৷
বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র সরকার গড়া নিশ্চিত হতেই মোদীকে অভিনন্দন জানিয়ে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন ট্রুডো৷ সেই সঙ্গে তিনি এ-ও উল্লেখ করেছিলেন, তাঁর (মোদি) সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত কানাডা৷ ট্রুডো আরও বলেছিলেন, ‘‘মানবধিকার, আইনের শাসন বজায় রেখেই দু’দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব৷’’
কানাডার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে মোদীও চান৷ সোমবার প্রধানমন্ত্রী তাঁর পোস্টে সে কথাই উল্লেখ করেছেন৷ তিনি লেখেন, ‘‘ভারত পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং একে অপরের উদ্বেগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে কানাডার সঙ্গে কাজ করার জন্য উন্মুখ৷’’ কূটনৈতিক মহলের একাংশের মতে, ভারতের সঙ্গে কানাডার সম্পর্ক যে ভাবে দিনে দিনে নানা ভাবে অবনতি হচ্ছিল, তা উন্নতি করতে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীই কার্যকরী পদক্ষেপ করবে৷ ট্রুডোর শুভেচ্ছাবার্তা, তার পর কানাডার সঙ্গে মোদীর কাজ করার ইচ্ছাপ্রকাশ দু’দেশের সম্পর্ককে মজবুত করবে৷
উল্লেখ্য, গত বছর জুন মাসে খলিস্তানপন্থী সংগঠন ‘খলিস্তান টাইগার ফোর্স’ (কেটিএফ)-এর প্রধান তথা কানাডার সারের গুরু নানক শিখ গুরুদ্বার সাহিবের প্রধান নিজ্জরকে গুরুদ্বার চত্বরের মধ্যেই গুলি করে খুন করা হয়৷ সেই ঘটনার তদন্তে ভারতের গুপ্তচর সংস্থার ভূমিকা ছিল বলে জানিয়ে ট্রুডো কানাডার পার্লামেন্টে দাঁডি়য়ে ভারতকে নিশানা করেছিলেন৷ বলেছিলেন, ‘‘আমাদের তদন্তকারী সংস্থাগুলি এ বিষয়ে আরও বিশদে তদন্ত করছে৷”
পরবর্তী পদক্ষেপে কানাডার নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ জারি করা হয়৷ যার প্রতিক্রিয়ায় ট্রুডো সরকার ভারতে অবস্থানকারী কানাডার নাগরিকদের উদ্দেশে ‘বিশেষ নিরাপত্তামূলক সতর্কতা’ জারি করেছিল৷ এর পরে ট্রুডো নয়াদিল্লির সঙ্গে সুসম্পর্কের পক্ষে সওয়াল করে সাময়িক ভাবে বিতর্কে ইতি টেনেছিলেন৷
কিন্ত্ত গত ফেব্রুয়ারিতে কানাডার সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবাল নিউজ়’ সে দেশের গুপ্তচর সংস্থা (সরকারি ভাষায়, ‘বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা’) ‘কানাডিয়ান সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস’-এর একটি রিপোর্ট ফাঁস হয়েছিল৷ সেই রিপোর্টে দাবি করা হয়, কানাডার নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ‘অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ’ করতে পারে ভারত! যা নিয়ে নতুন করে টানাপডে়ন তৈরি হয়েছিল দু’দেশের মধ্যে৷ তবে ভারত ওই রিপোর্টের দাবি নস্যাৎ করেছিল৷ গত সাত মাস ধরে দু’দেশের মধ্য চাপানউতোর চলছে৷ মোদির তৃতীয় জমানায় দু’দেশের সম্পর্ক উন্নতি হয় কি না, সেটাই দেখার৷