দিল্লি, ৩ জুন – প্রহর গুনছে গোটা দেশ। লোকসভা ভোটের ফল জানতে রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা। এহেন পরিস্থিতিতে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার রাজ্য ছেড়ে এখন দিল্লিতে কাটাচ্ছেন। দুদিন রাজধানীতে কাটিয়েছেন। সোমবার তাঁর বৈঠক হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে। বিকেল চারটেয় তাঁর দেখা করার কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গেও। প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর এই বৈঠকের খবরে স্বভাবতই তুমুল জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে।
নীতিশ অনুগামীদের সরল ব্যাখ্যা, ভোট পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্যই মোদি এবং শাহের সঙ্গে বৈঠক করছেন মোদি। যদিও এই তত্ত্ব মানতে নারাজ রাজনৈতিক মহল। কারণ প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দুজনেই এখন ব্যস্ত আগামীকালের গণনা নিয়ে। এই চুড়ান্ত ব্যস্ততার সময়ে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।
বিহারের রাজনৈতিক মহলের খবর, রাজ্যে এবার মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিতে নীতীশের উপর চাপ সৃষ্টি করছে শরিক বিজেপি। তাদের বক্তব্য, ২০০৫ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর পদে নীতীশকে সমর্থন দিয়েছে বিজেপি। তিনবার তিনি ছেড়ে চলে গিয়েছেন, প্রতিবারই আবার তাঁকে সাদরে গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিবারই তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদে মেনে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এবার মুখ্যমন্ত্রীর পদ হস্তান্তর করুন নীতিশ।
এই বৈঠকের পরিপ্রেক্ষিতে বিহারের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের বক্তব্য, নীতীশজির জন্য দরজা খোলা রয়েছে। বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর পদ কেড়ে নিতে চাইলে আমাদের সঙ্গে চলে আসুন। গত বছরও নীতিশ শিবির বদল করার পর একই কথা বলেছিলেন আরজেডি সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ যাদব।
তবে শারীরিকভাবে অসুস্থ নীতীশকে নিয়ে বিড়ম্বনায় তাঁর দল জেডিইউ এবং বিজেপি। কোন কিছুই তিনি স্মরণে রাখতে পারছেন না। এক সভায় প্রধানমন্ত্রীকে বারবার তিনি মুখ্যমন্ত্রী বলে উল্লেখ করেন। অসুস্থতার কারণে তাঁকে লন্ডনেও যেতে হয়। ফলে এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর মতো পদের দায়িত্ব সামলানো কঠিন। কারণ, আইনেও বলা হয়েছে, শারীরিক সমস্যা নিয়ে কোন ব্যক্তি সাংবিধানিক বা প্রশাসনিক পদে থাকতে পারবেন না।
প্রসঙ্গত বলা যায়, জেডিইউ-তে এমন কেউ নেই যাঁকে নীতীশের বিকল্প হিসেবে বিজেপি মেনে নেবে। তাই আগামী বছর বিহার বিধানসভার ভোটার আগে তারা মুখ্যমন্ত্রীর পদের দখল নিতে চায় বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। রাজনৌতিক বিশেষজ্ঞদের মোতে, জেডিইউ ভেঙে যাওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা। একদল যোগ দেবে বিজেপিতে, অন্য দল যাবে আরজেডি-তে। আর রাজনৈতিক জগৎ থেকে অবসর নেবেন নীতিশ কুমার।
এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। লোকসভায় নীতীশের দলের ফল খারাপ হযে মুখ্যমন্ত্রীর পদের হস্তান্তর আরও ত্বরান্বিত হওয়ার সম্ভাবনা।