৪৫ বছরে এই প্রথম পোল্যান্ড সফরে মোদি, তারপর গন্তব্য ইউক্রেন 

রাশিয়ার পর এবার পোল্যান্ড-ইউক্রেন সফরে প্রধানমন্ত্রী। বুধবার পোল্যান্ড সফরে রওনা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রীর পোল্যান্ড সফরকে বেশ গুরুত্ব সহকারের দেখছেন কূটনীতিক মহল। কারণ দীর্ঘ ৪৫ বছর পর প্রথমবার দেশের কোনও প্রধানমন্ত্রী পোল্যান্ড সফর করছেন।

এ দিন পোল্যান্ডে রওনা দেওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে লেখেন, “ওয়ারশোর উদ্দেশে রওনা দিচ্ছি। এক বিশেষ সময়ে পোল্যান্ড সফরে যাচ্ছি যখন দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭০ বছর পূর্তি হচ্ছে। পোল্যান্ডের সঙ্গে এই বন্ধুত্ব ভারতের কাছে অত্যন্ত মূল্যবান। গণতন্ত্র ও বহুত্ববাদের প্রতিশ্রুতিই এই সম্পর্ককে আরও মজবুত করেছে।” প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, তিনি পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা ও প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্কের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও বৈঠক করবেন। পাশাপাশি ওয়ারশোয় অনাবাসী ভারতীয়দের আয়োজিত অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন তিনি। জানা গিয়েছে, কূটনীতি থেকে প্রতিরক্ষা বিষয়ে অংশীদারিত্ব ও সাংস্কৃতিক বিনিময় নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হবে।সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক এবং রাষ্ট্রপতি আন্দ্রেস দুদার সঙ্গে বৈঠক করবেন নরেন্দ্র মোদি। ভারত এবং পোল্যান্ডের সম্পর্ক আরও মজবুত করতে এই বৈঠক ভীষণ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।

নরেন্দ্র মোদির এই পোল্যান্ড সফর আরও একটি কারণে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এখান থেকেই ইউক্রেন সফরে যাবেন তিনি। কয়েক সপ্তাহ আগে রাশিয়া সফরে গিয়ে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। মোদি-পুতিনের আলিঙ্গন দেখে জেলেনস্কি বলেছিলেন, ”বৃহত্তম গণতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী একজন যুদ্ধাপরাধীকে আলিঙ্গন করছেন। শান্তিরক্ষার ক্ষেত্রে এটা বড় ধাক্কা।” তারপরই অবশ্য জানা গেছিল, ইউক্রেনে যাবেন মোদি। সেই সফর এবার সম্পন্ন হতে চলেছে।


পোল্যান্ডে গিয়ে রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পাশাপাশি সেখানকার প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন নরেন্দ্র মোদী। এই সফর সম্পর্কে তিনি জানিয়েছেন, ”৭০ বছরের পুরনো সম্পর্ক রয়েছে ভারত এবং পোল্যান্ডের। ভারতের জন্য পোল্যান্ড মধ্য ইউরোপের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অংশীদার। তাঁদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে এই আশা রাখছি।’ দু’দিনের পোল্যান্ড সফর থেকেই ট্রেনে করে ইউক্রেন যাবেন নরেন্দ্র মোদি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু পর এটাই হতে চলেছে মোদির প্রথম ইউক্রেন সফর।

নরেন্দ্র মোদির রাশিয়া সফরের জন্য ইউক্রেনের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক রসাতলে যেতে পারে বলে অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন। তবে মোদির ইউক্রেন সফর সফল হলে দুই দেশের সম্পর্ক যেমন মজবুত হবে, একই সঙ্গে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতিরও অবসান ঘটতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করতে চলেছেন মোদী। যদিও এর আগে গত জুন মাসে জি৭ সম্মেলনে যোগ দিতে ইতালি গিয়ে জেলেনস্কির সঙ্গে পার্শ্ববৈঠক করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।