ওয়েইবো থেকে অ্যাকাউন্ট মুছে, সড়ক নির্মাণে চিনা সংস্থাকে ব্রাত্য করে বার্তা দিতে চলেছে মোদি

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (File Photo: Twitter | @narendramodi)

লাদাখ সীমন্তে সংঘাতের কারণে ৫৯টি চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে মোদি সরকার। সেই তালিকায় রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ওয়েইবো’। চিন সফরের আগে ওয়েইবো’তে নরেন্দ্র মোদির নামে খোলা হয়েছিল একটি ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট। সরকারি সূত্রে জানা যাচ্ছে, ৫৯টি চিনা অ্যাপের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির দিনেই নিজের এই অ্যাকাউন্টটি মুছে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন মোদি।

কেন এই অ্যাকাউন্টটি মুছে ফেলতে এত সময় লাগল? জানা যাচ্ছে, ভিআইপিদের অ্যাকাউন্টের গ্রাহকে বেশ কিছু নির্দিষ্ট নীতি থাকে। তা সবাইকে মেনে চলতে হয়। ভারতকেও সেই একই নিয়ম মানতে হয়েছে। ফলে এই দেরি। এই অ্যাকাউন্টটিতে ১১৫টি পোস্ট করেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। তার মধ্যে ১১৩টি মুছে দেওয়া হয়েছিল। বাকি দুটি পোস্টে ছিল মোদি এবং জিনপিং-এর ছবি।

এই অ্যাকাউন্টটি থেকে চিনা প্রেসিডেন্টের ছবি মুছে ফেলা মুশকিল। তাই এগুলি এখনও রয়ে গিয়েছে। ২০১৫ সালের ৪ মে চিন সফরের আগে ‘ওয়েইবো’তে অ্যাকাউন্ট খোলেন মোদি। ২,৪৪,০০০ ফলোয়ার ছিল এই অ্যাকাউন্টে। বেশির ভাগ চিনা নাগরিক এর ফলোয়ার। ২০১৫ থেকে ওই অ্যাকাউন্ট ব্যহার করে ১৫ জুন, চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের জন্মদিন উপলক্ষে তাকে শুভেচ্ছাও জানান মোদি।


তবে এবার সীমান্তে সংঘাতের আবহে সেই প্রথায়ও ছেদ পড়ে। একদিকে চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ, অন্যদিকে নিজের অ্যাকাউন্ট মুছে দেওয়া, চিনা সংস্থাকে বরাত না দেওয়া এইভাবে চিনের বিরুদ্ধে জবাব দেওয়া শুরু করল ভারত।

ভারতের রাস্তা তৈরিতে এবার বন্ধ হয়ে গেল চিনা সংস্থাগুলির প্রবেশের পথ। এ দেশের কোনও জাতীয় সড়ক প্রকল্পে বরাত কোনও চিনা সংস্থা পাবে না বলে বুধবার সাফ জানিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়কড়ি। এককভাবে তো নয়ই, কোনও জয়েন্ট ভেঞ্চারে চিনের কোনও সংস্থাকে পা রাখতে দেওয়া হবে না বলে নীতিন গড়কড়ি জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চিনের সংস্থা যাতে লগ্নি করতে না পারে, সে বিষয়ে পদক্ষেপ করছে কেন্দ্রীয় সরকার।

লাদাখে চিনা আগ্রাসনে ২০ জন ভারতীয় সেনা জওয়ানের শহিদ হওয়ার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন মোদি মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ এই সদস্য। এদিন, একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নীতিন গড়কড়ি বলেছেন, দেশে চিনের কোনও সংস্থার সঙ্গে এক হয়ে কোনও রাস্তা তৈরি করা হবে না। কেন্দ্রের তরফে আগামী দিনে এমন অনুমতি দেওয়াও হবে না। যদি কোনও চিনা সংস্থা যৌথ অংশীদারিত্বের মাধ্যমে এদেশে কাজ করতে চায়, তারও অনুমতি দেওয়া হবে না। কেন্দ্রীয় সরকার এবিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।

খুব শীঘ্রই কেন্দ্রের তরফে নীতিমালা ঘোষণা করে জানিয়ে দেওয়া হবে, বিভিন্ন হাইওয়ে প্রকল্পে চিনা সংস্থাগুলিকে ব্যান করে দেওয়া হবে। সড়ক পরিবহণ, হাইওয়ে এবং এমএসএমইর ক্ষেত্রেও এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথে হাঁটতে চলেছে কেন্দ্র।

চিনের পরিবর্তে দেশের সংস্থাগুলি যাতে এই প্রকল্পে অংশ নিতে পারে, তার সুযোগ করে দিতে টেন্ডারের বিভিন্ন শর্তেও পরিবর্তন আনতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ চলছে যেখানে চিনা সংস্থাগুলি বরাত পেয়েছে। এই সমস্ত প্রকল্পের ভবিষ্যত আগামী দিনে কি হবে মন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হলে নীতিন গড়কড়ি বলেন, বর্তমানে এবং ভবিষ্যতে সরকারি টেন্ডারের ক্ষেত্রে সরকরের নতুন নীতি কার্যকর করা হবে।