এক মাসের বেশি সময় ধরে দিল্লি সীমান্তে বসে নয়া তিন কৃষি আইনের বিরােধিতা করছেন কয়েক হাজার কৃষক। বিরােধী রাজনৈতিক দলগুলিও কৃষকদের এই আন্দোলনকে সমর্থন করছেন। এমত অবস্থায় বারংবার কৃষি আইনের পক্ষে সওয়াল করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সােমবার ফের একবার কৃষি আইনের পক্ষে সওয়াল করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি ।
এ দিন মহারাষ্ট্রের সাঙ্গোলি থেকে বাংলার শালিমার পর্যন্ত কৃষক রেলের উদ্বোধন করে মােদি বলেন, পরিকাঠামাে তৈরি করে তবেই কৃষি আইনে সংস্কার করেছে কেন্দ্র সরকার। দেশের কৃষকরাও এই পরিবর্তনের লাভ পেতে শুরু করেছে বলে মতপ্রকাশ করেন তিনি।
এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি বলেন, এতদিন দেশের এক প্রান্তের ফসল অন্য প্রান্তের বাজারে পৌঁছে দেওয়ায় সমস্যা হত। সড়ক পথে খরচও ছিল বেশি। তিনি জানান, কোভিড পরিস্থিতি চার মাস আগে কৃষক রেল পরিষেবা শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ইতিমধ্যে ১০০ টি ট্রেন চলাচল করছে। প্রথমে সাপ্তাহিক হলেও পরে সপ্তাহে তিনদিন করে এই ট্রেন চলাচল করছে।
এদিন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে এসেছে বাংলার কথাও। মােদি বলেন, এবার কৃষক ট্রেনের সুফল পাবেন বাংলার চাষিরাও। তাঁদের উৎপাদন করা ফসল এবার দশের অন্যান্য প্রান্তে সহজে পৌঁছে যাবে। বাংলায় আলু, কপি, বেগুন প্রচুর উৎপাদন হয়। আবার মিষ্টি জল অথবা লােনা জলেরও মাছ প্রচুর পাওয়া যায়। যা দেশের অন্যত্র পাওয়া যায় না। এবার সহজেই এই সমস্ত সামগ্রী অন্যত্র পৌঁছে যাবে বলেও মতপ্রকাশ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর কথায়, এই ট্রেনগুলিতে অত্যাধুনিক কোল্ডস্টোরেজের ব্যবস্থা রয়েছে। তাই ফসল বা পচনশীল খাদ্যসামগ্রীতে পচন ধরবে না। তিনি আরও জানান, কৃষকদরে আত্মনির্ভর করতে ও তাঁদের আয় বাড়াতে কৃষিক্ষেত্রে একাধিক সংস্কার করা হচ্ছে। উল্লেখ করেন, কৃষক উড়ানের কথাও। প্রসঙ্গত, নয়া ট্রেনটি ৪০ ঘণ্টায় মহারাষ্ট্র থেকে বাংলায় পৌঁছে যাবে। এই ট্রেনে মহারাষ্ট্রের প্রচুর ফসল বাংলায় আসবে।
শততম কৃষক রেলের উদ্বোধনের পর বাংলার কৃষকদের উন্নতির পক্ষে সওয়াল করলেন প্রধানমন্ত্রী। তবে এর পিছনে রাজনৈতিক তাৎপর্যও রয়েছে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। কৃষক ইউনিয়নগুলাের সঙ্গে ফের আলােচনার টেবিলে বসতে চলেছে কেন্দ্র। আগামি বুধবার দুপুর ২ টার সময়ে কৃষক ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য কেন্দ্রের তরফে আহ্বান জানিয়ে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, কৃষকদের দাবির কথা মাথায় রেখে মুক্ত চিন্তাধারার মাধ্যমে সমস্ত ইস্যুগুলি সমাধান করা হবে।
কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর বলেন, ‘দেশের কৃষকদের মধ্যে সিংহভাগ নতুন কৃষি আইনগুলােকে সমর্থন করেছেন। দিল্লি চলাে কর্মসূচীর আওতায় যে কৃষকরা শহরের সীমান্ত এলাকায় আন্দোলন করছেন, আশা করছি, তারাও আইনের ইতিবাচক দিকটা বুঝতে পারবেন। সিএনআরআইয়ের বৈঠকে তিনি বলেন, কয়েকজন মানুষ কৃষক ইউনিয়নগুলােকে বিপথে চালিত করার চেষ্টা করছে।