দিল্লি, ২২ এপ্রিল– ১৯ এপ্রিল থেকে লোকসভা নির্বাচন শুরু হয়ে গিয়েছে৷ এক দফার ভোট গ্রহণও হয়ে গিয়েছে৷ যত পরবর্তী দফাগুলি এগিয়ে আসছে, ততই রাজনৈতিক দলগুলির একে অপরকে ছাপিয়ে যাওয়ার প্রবনতা বাড়ছে৷ কখনও কংগ্রেস বিজেপিকে আবার কখনও বিজেপি কংগ্রেসকে কুপোকাৎ করতে শব্দবানে শান দিচ্ছে৷ রাজস্থানের জনসভা থেকে কংগ্রেসকে কুপোকাৎ করতে প্রধানমন্ত্রী মোদির ভাষণ এমনই এক উদাহরণ৷ এবার কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ আনলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷
দেশের সম্পদ থেকে শুরু করে মা-বোনদের গয়না সবই সংখ্যালঘুদের বিলোবে কংগ্রেস৷ বিরোধী দলকে আক্রমণ করে বলেন যে নকশাল ও বামপন্থাদের থেকে প্রভাবিত কংগ্রেস৷ তারা সাধারণ মানুষের সোনাদানা ও সম্পত্তি লুঠ করে আবার বিলিয়ে দেবে৷ প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই লুঠ করা সম্পত্তি কাদের দেবে ওরা (কংগ্রেস)? যাদের বেশি সন্তান রয়েছে…যারা অনুপ্রবেশ করেছে….আপনাদের কষ্টোর্জিত সম্পত্তি অনুপ্রবেশকারীদের দিয়ে দেবেন? কংগ্রেসের এই ম্যানিফেস্টোর সঙ্গে কি আপনারা সহমত?’ মোদির এমন মারাত্মক অভিযোগের পর অবশ্য কংগ্রেসও নেমে পড়েছে প্রতিত্তুর দিতে৷ বিকেলেই রাহুল গান্ধি এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে লেখেন, “প্রথম দফার ভোটের পর আশাহত হয়ে নরেন্দ্র মোদির মিথ্যার লেভেল এতটাই নীচে পৌঁছেছে যে এবার জনগণের নজর ঘোরানোর চেষ্টা চলছে৷” কংগ্রেসের দাবি, লোকসভা ভোটের প্রচারে এই প্রথম সরাসরি সংখ্যালঘুদের নাম করে আক্রমণ করলেন মোদি৷ হতাশা থেকেই মোদি এ পথে এগিয়েছেন বলে দাবি তাদের৷ বিরোধীদের মতে, নির্বাচন কমিশন আর জীবিত নেই৷ তা আরও দুর্ভাগ্যজনক৷
সম্প্রতি হায়দরাবাদে রাহুল গান্ধি দাবি করেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে কোন শ্রেণির হাতে কত সম্পদ আছে তা জানতে সমীক্ষা করা হবে৷ আজ রাজস্থানের বাঁশোয়াড়ার এক জনসভায় রাহুলের মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে মোদি বলেন, ‘মনমোহন সিংহজির সরকার ক্ষমতায় থাকার সময়েই জানিয়েছিল দেশের সম্পদে সবচেয়ে আগে মুসলিমদের অধিকার আছে৷ এ বার তারা বলছে, ক্ষমতায় এলে আপনাদের রোজগারের অর্থ মুসলিম, অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে বণ্টন করবে৷’
সেই সঙ্গে মনমোহন সিংহের পুরনো ভিডিয়ো পোস্ট করে কংগ্রেসের দাবি, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মুসলিম সংখ্যালঘুদের ক্ষমতায়নের কথা বলেছিলেন৷ সমাজমাধ্যমে কংগ্রেস আরও মনে করিয়ে দিয়েছে, মোদির বাবা-মাও ছয় সন্তানের জনক৷ তৃণমূল নেতা সাকেত গোখেলের মতে, তাঁর ‘গ্যারান্টি’র কথা যে আর কেউ বিশ্বাস করছেন না তা বুঝেছেন মোদি৷ তাই ঘৃণা-ভাষণ শুরু করেছেন৷ পাশাপাশি রাজস্থানের জেলোরের একটি সভায় নাম না করে সোনিয়া গান্ধিকে আক্রমণ করেছেন মোদি৷ রাজস্থানের সভায় তাঁর কটাক্ষ, যাঁরা ভোটে জিততে পারেন না তাঁরা মাঠ ছেডে় পালিয়ে রাজস্থান থেকে রাজ্যসভার সদস্য হয়েছেন৷
কয়েক মাস আগে কংগ্রেস শাসিত রাজস্থান থেকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হন সোনিয়া৷ তার আগে দীর্ঘদিন লোকসভায় রায়বরেলী ও অমেঠীর প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি৷ রাজস্থানের জেলোরে বিজেপি প্রার্থী লম্বারাম চৌধুরির হয়ে প্রচারের সময়ে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, রাজস্থান থেকে নির্বাচিত রাজ্যসভার সাংসদেরা কি রাজস্থানের বিষয়ে রাজ্যসভায় প্রশ্ন তোলেন? তাঁর বক্তব্য, ‘কংগ্রেস রাজস্থান থেকে এক দক্ষিণী নেতাকে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছে৷ তিনি কি কখনও রাজস্থান নিয়ে কোনও কথা বলেছেন? আপনারা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকেও রাজ্যসভায় পাঠিয়েছেন৷ তিনি অসুস্থ ছিলেন৷ কিন্ত্ত তাঁকে কখনও রাজ্যসভায় দেখেছেন কি? এখন আপনারা আবার এক নেতাকে পাঠালেন৷ যাঁরা ভোটে জিততে পারেন না তাঁরাই রাজস্থান থেকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হন৷’’