• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

ফের ঘরের পথে পরিযায়ী শ্রমিকরা

মুখ্যমন্ত্রী থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সকলেই লকডাউনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। সেই কথা শুনে তড়িঘড়ি বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন হাজারাে পরিযায়ী শ্রমিক।

প্রতীকী ছবি (File Photo: AFP)

গত বছরের স্মৃতি এখনও টাটকা। করােনা সংক্রমণের কারণে দেশজুড়ে যখন লকডাউন জারি হয়েছিল সবথেকে বেশি বিপাকে পড়েছিলেন পরিযায়ী শ্রমিক’রাই। পথে টাকা না থাকায় অধিকাংশই পায়ে হেঁটে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন। মাঝপথে প্রাণও হারাতে হয়েছিল অনেককে।

বছর ঘুরতেই ফের একবার সংক্রমণের শীর্ষে মহারাষ্ট্র। করােনা নিয়ন্ত্রণে জারি হয়েছে নৈশ কার্ফু। সপ্তাহ শেষে লকডাউন। মুখ্যমন্ত্রী থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সকলেই লকডাউনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। সেই কথা শুনে তড়িঘড়ি বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন হাজারাে পরিযায়ী শ্রমিক।

বছর ঘুরতেই পুরনাে অবস্থায় ফিরে গিয়েছে মহারাষ্ট্র। দেশে যেখানে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা দেড় লাখ ছুঁতে চলেছে। সেখানে কেবল মহারাষ্ট্রেই প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন ৫০-৬০ হাজার মানুষ। এই পরিস্থিতিতে যে কোনও সময় লকডাউন হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পরিযায়ী শ্রমিক’রা।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে আগামী দিলে লকডাউন করার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেও। তাই এই বছর আর ঝুঁকি নিচ্ছেন না শ্রমিকা। বাস-ট্রেন বা নিজেদের অটো ট্রাক্টরে চেপেই বাড়ির উদ্দেশ্যে পাড়ি জমাচ্ছেন তাঁরা। ইন্দোরের এক টোল প্লাজার কর্মচারী জানিয়েছেন, বিগত ৪-৫ দিন ধরেই মহারাষ্ট্র থেকে প্রতুর গাড়ি ভিনরাজ্যে যাচ্ছে। এদের মধ্যে কেউ যেমন নিজদের গাড়িতে যাচ্ছেন, কেউ আবার অটো-ট্রাক্টরে যাবতীয় জিনিসপত্র নিয়ে পরিবার সহ ফিরে যাচ্ছেন। অধিকাংশই লকডাউনের সম্ভাবনায় বাড়ি ফিরছেন।

মহারাষ্ট্রের এক অটো চালক জানিয়েছেন গত বছর আচমকাই লকডাউন জারি হওয়ায় প্রবল অর্থকষ্টের মধ্যে পড়তে হয়েছিল। কোনও মতে পরিবার নিয়ে ঝাড়খণ্ডে নিজের বাড়িতে ফিরেছিলেন। কিন্তু লকডাউন উঠতেই পেটের টানে আবারও মহারাষ্ট্রেই ফিরে এসেছিলেন। তবে পরিস্থিতি এবার ফের খারাপ হওয়ায় ইতিমধ্যেই সপ্তাহ শেষে লকডাউন জারি হয়েছে। সম্পূর্ণ লকডাউন জারির আগেই তাই তারা বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। এবার আর ফিরবেন কিনা, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন তিনি।

আরেক গাড়ি চালক জানান, এখনও লকডাউন জারি না হলেও বহু মানুষই সংক্রমণের ভয়ে বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। বের হলেও বাস বা ট্যাক্সিতে উঠতে ভয় পাচ্ছেন। ফলে এমনিতেই ব্যবসায় মন্দা দেখা দিয়েছে। দিনে দু’বার খাবার জোটানাের মতাে অর্থও রােজগার হচ্ছে না। ট্রেনে প্রচণ্ড ভিড় হওয়ায় নিজের গাড়িতেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন তিনি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই ফিরবেন আবার।

উল্লেখ্য, বিগত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে মহারাষ্ট্র থেকে বিহার, ঝাড়খণ্ডগামী ট্রেনগুলিতে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছে। মুম্বইয়ের বাস টার্মিনাসগুলােতেও পরিযায়ী শ্রমিকদের টিকিট কাটার লম্বা লাইন দেখা গিয়েছে। একই অবস্থা দিল্লি, কেরল, তামিলনাড়ুতেও। সেখানেও ভিন রাজ্যের শ্রমিকরা একের পর এক নিজেদের বাড়ির পথ ধরছেন।