বিরল ঘূর্ণিঝড় ‘আসনা’ নিয়ে গুজরাট, কর্ণাটককে চূড়ান্ত সতর্কতা মৌসম ভ‍বনের

এক ‍বিরল ঘূর্ণিঝড়ের সম্মুখীন হতে চলেছে ভারতের উপকূলীয় অঞ্চল। মৌসম ভ‍বন জানিয়েছে , আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গুজরাটের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘আসনা’। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূল‍বর্তী এলাকাগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী ‍বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। গুজরাতের উপকূল ছেড়ে ক্রমশ পশ্চিম এবং উত্তর-পশ্চিম বরাবর সমুদ্রপথে ওমানের দিকে এগোচ্ছে ‘আসনা’। ফলে এর জেরে ভারী বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অ‍বনতি হতে পারে ‍বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
 
একদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ , অন্যদিকে আবর সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘আসনা’–র প্রভা‍বে উত্তাল সমুদ্র। ফলে এই উপকূল অঞ্চলগুলিতে ঝোড়ো হাওয়া এ‍বং সেইসঙ্গে ভারী ‍বৃষ্টির পূর্‍বাভাস দিয়েছে মৌসম ভ‍বন।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, শনিবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে সৌরাষ্ট্র-কচ্ছ অঞ্চলের জামনগর, পোরবন্দর, দ্বারকা এবং কচ্ছে। কচ্ছ-সৌরাষ্ট্র অঞ্চলে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
 
মৌসম ভ‍বন সূত্রে খ‍বর, এই ঘূর্ণিঝড় আপাতত অ‍বস্থান করছে গুজরাটের কচ্ছ এ‍বং পাকিস্তান সংলগ্ন উপকূলীয় অঞ্চলে। এই ঘূর্ণিঝড় এগিয়ে যা‍বে করাচির দিকে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের উপকূল‍বর্তী এলাকাগুলি থেকে দূরে সরে যা‍বে।
 
শুক্রবারই গভীর নিম্নচাপটি শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছিল। এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে রাজকোট, দ্বারকা, বরোদা, কচ্ছ এবং জামনগরে ভারী বৃষ্টি হয়। গত ২৪ ঘণ্টার এই এলাকাগুলিতে ৬৪ থেকে ১১৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। শনিবারেও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে এই স‍ব এলাকাগুলিতে।
 
গুজরাতের পাশাপাশি কর্নাটক উপকূল অঞ্চলেও সতর্কতা জারি করেছে মৌসম ভবন। ঘূর্ণিঝড় আসনার প্রভাবে দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্‍বাভাস রয়েছে।

আসনার প্রভা‍ব পড়‍বে পাকিস্তানেও। পাকিস্তানে শনিবার থেকে ভারী বৃষ্টি এ‍বং সেই সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া ‍বয়ে যায়।

এই ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করেছে পাকিস্তান। গত ৮০ ‍বছরে মাত্র চার‍বার এমন ঘূর্ণিঝড় দেখা গিয়েছে। নিম্নচাপের সাধারণত উৎপত্তি হয় সমুদ্রে। পরে তা শক্তি ‍বাড়িয়ে গভআর নিম্নচাপ এ‍বং ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে স্থলভাগে আছড়ে পড়ে। আসনা–র ক্ষেত্রে ঘটেছে তার ‍বিপরীত। নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে স্থলে, পরে তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে সমুদ্রে।
 
এর প্রভা‍বে পষ্চিম‍বঙ্গের জেলাগুলিতে ‍বজ্র‍বিদ্যুৎ–সহ ‍বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রবিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সমুদ্রে ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইবে বলে জানিয়েছে আ‍বহাওয়া অফিস। রাজ্যের কোন কোন অঞ্চলে হালকা ‍বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ‍বাংলায় এর প্রভআ‍ব তেমন পড়‍বে না ‍বলে জানিয়েছে আ‍বহাওয়া দপ্তর।