কোনও জোটে নয়, জন্মদিনে একলা চলার সিদ্ধান্ত মায়াবতীর

লখনউ, ১৫ জানুয়ারি– সোমবার দুটি জল্পনার খোলসা করেছেন সমাজবাদি পার্টির সুপ্রিমো মায়াবতি৷ প্রথম তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নিচ্ছেন বলে যে জল্পনা চলছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন৷ আর দ্বিতীয়, তার দল কোনও জোটে না থেকে একলা চলার সিদ্ধান্তেই অটল৷ এদিন তাঁর ৬৮ তম জন্মদিনে বহুজন সমাজ পার্টির সুপ্রিমো মায়াবতী ঘোষণা করলেন, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তাঁর দল বিএসপি এনডিএ বা ইন্ডিয়া, কোনও জোটেই থাকবে না৷ নির্বাচনের পর ঠিক করবেন বিএসপি কোনও জোটের হাত ধরবে কিনা৷ নিজের সিদ্ধান্ত ঘোষণা পর্বে এদিন পোড়খাওয়া নেত্রী বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশে জোট রাজনীতিতে বিএসপির লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি হয়েছে৷ আমাদের ভোট ভাগাভাগি হয়েছে জোটের দলগুলির মধ্যে৷ উলটো ঘটনা কখনও ঘটেনি৷’
তবে মায়াবতীর এই সিদ্ধান্ত বিজেপি বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোটকে বড় ঝটকা বলেই মত বিশেষজ্ঞমহলের৷ এই সিদ্ধান্তে একদিকে কংগ্রেস অন্যদিকে বিজেপির দু’জনেরই ক্ষতিই দেখছে রাজনীতিক মহল৷ কারণ সূত্রের খবর, সোনিয়া গান্ধি চেয়েছিলেন, মায়াবতীকে জোটে নেওয়া হোক৷ কারণ, গত বছর বিধানসভা ভোটে মায়াবতীর দল মাত্র দুটি আসন পেলেও বহু জায়গায় কংগ্রেস ও এসপির ভোটে ভাগ বসিয়েছে৷ এই পরিস্থিতি মাথায় রেখে দলিত নেত্রীকে পুরোপুরি উপেক্ষা করা ঠিক হবে না, মনে করছিল কংগ্রেসের একাংশ৷ আর সেই কারণেই বিজেপিও তৎপর ছিল৷ অন্যদিকে, পদ্ম শিবির চেয়েছিল, মায়াবতী বিধানসভা ভোটের মতো একাই লড়াই করুন৷ কোনও জোটে যেন তাঁর দল যোগ না দেয়৷
এদিন, উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজেপিকে তোপ দেগে বলেন, ‘ওরা কেবল ‘জাতপাত ও সাম্প্রদায়িকতার’ রাজনীতি৷ রাজ্যে এসসি, এসটি, ওবিসিদের পরিস্থিতি দুঃখজনক৷ সরকারি বা অন্য চাকরি নেই৷ আমার গোটা জীবন উৎসর্গ করেছি এই মানুষগুলির জন্য৷ জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত রাজনীতিতেই থাকব৷ পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কাজ করব৷’
তবে অন্যদিকে, এদিন সকাল সকাল মায়াবতীকে ফোন করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ৷ অনেকেই মনে করেছেন, শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি জোট বিষয়েও তাঁর সঙ্গে কথা হয়ে থাকতে পারে যোগীর৷ যদিও কোনও শিবির এই জল্পনার বিষয়ে মুখ খোলেনি৷ উত্তরপ্রদেশে বহুজন সমাজবাদী পার্টির জনভিত্তি এবং সংগঠনের যা অবস্থা তাতে লোকসভা ভোটে ক’টা আসন পাবে তা নিয়েই সংশয় আছে৷ ফলে ভোটের পর কোনও দল তাঁকে ডাকবে কিনা তা নিয়েই সংশয় আছে৷ কিন্ত্ত ভোটে একলা চলার সিদ্ধান্ত নিয়ে বিজেপির সুবিধা করে দিলেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল৷ গত বছর বিধানসভা ভোটেও একলা চলার সিদ্ধান্ত নিয়ে কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টিকে বিপাকে ফেলেন৷ বহু আসন এই দুই দল হারায় বিএসপি প্রার্থীরা ভোট কেটে নেওয়ায়৷ মায়াবতীর দল জেতে মাত্র দুটি আসনে৷