ভোপাল, ৯ মার্চ– নিজের সিদ্ধান্তেই অটল বিএসপি সুপ্রিমো মায়াবতী৷ গত ১৫ জানুয়ারির সিদ্ধান্তই ফের তার এক্স হ্যান্ডেলে আওড়ালেন বহেনজী৷ বললেন, ‘সংবাদমাধ্যম গুজব ছড়াচ্ছে যে বিএসপি ইন্ডিয়া জোটে শামিল অথবা তৃতীয় মোর্চা গঠন করতে পারে৷ এসবই মিডিয়ার পরিকল্পিত গুজব৷ বিএসপি কারও সঙ্গে নেই৷ একলা লড়াইয়ের সিদ্ধান্তের কোনও নড়চড় হয়নি৷’ আর এতেই বজ্রপাত কংগ্রেসের মাথায়৷
তাঁর জন্মদিনেই বহুজন সমাজ পার্টির সুপ্রিমো ঘোষণা করেছিলেন, উত্তর প্রদেশে লোকসভা নির্বাচনে বিএসপি একাই লড়াই করবে ৮০ আসনে৷ তিনি কোনও জোটে নেই৷ শনিবার সেই একই কথা এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে মায়াবতী বলেছেন, ২০১৯-এর বিএসপি এবং এসপি-র জোট হয়েছিল৷ দুই দল যথাক্রমে দশটি এবং পাঁচটি আসনে জয়লাভ করে সেবার৷ কিন্ত্ত ভোটের পরই জোট ভেঙে যায়৷ দু-বছর আগের বিধানসভা ভোটেও আর দুই দলের বোঝাপড়া হয়নি৷ সেই ভোটে মায়াবতী কার্যত ওয়াকওভার দেন বাকিদের৷
তিনবারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা দলিত নেত্রী হিসাবে দেশে সবচেয়ে পরিচিত মুখ হয়েও দলকে বিধানসভায় উতরাতে পারেননি মায়াবতী৷ জেতেন মাত্র একটি আসন৷ প্রাপ্ত ভোট ছয় শতাংশের নিচে নেমে যায়৷
উল্লেখ্যযোগ্য হল তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো মায়াবতীর সঙ্গেও কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধির ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভাল হওয়া সত্বেও৷ দু’জনের ফোনে যোগাযোগ রাখেন নিয়মিত৷ ২০২২-এর বিধানসভা ভোটের এবং আসন্ন লোকসভা নির্বাচনেও কংগ্রেস-এসপি-বিএসপি জোট গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন সোনিয়া৷ বিএসপি নেত্রী সরাসরি রিজেক্ট না করে বেশ কিছুদিন সেই প্রস্তাব ঝুলিয়ে রেখে তা খারিজ করে দিয়েছেন৷
ইতিমধ্যে ভাইপোকে সরকারিভাবে তাঁর উত্তরসূরি ঘোষণা করেছেন৷ দলের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন ব্রাহ্মণ মুখ সতীশ মিশ্রকে৷ দলের মধ্যের এই পরিবর্তনে রাজনৈতিক মহল মনে করছেন, দলকে নতুন করে গড়তে চাইছেন নেত্রী৷ তবে তার সঙ্গে জোট না করার কোনও সম্পর্ক নেই৷ মায়াবতীর এই জোটে না করার পেছনে রাজনৈতিক দূরদৃষ্টিই রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে৷ কারণ দল টিকিয়ে রাখার পাশাপাশি বিজেপির সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রাখা তাঁর এখন পয়লা নম্বর লক্ষ্য৷ মায়াবতী ভালো করেই জানেন তিনি এনডিএ ছাড়া অন্য কোনও জোটে নাম লেখালে তিনি মোদি-শাহের রোষানলে পড়তে পারেন৷
বিজেপির সঙ্গে সু-সম্পর্ক বজায় থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তে এক প্রকার তালাচাবি পডে় গিয়েছে৷ বিএসপি সুপ্রিমো মনে করছেন, মোদিই ফের দিল্লির মসনদে বসতে চলেছেন৷ তাই ভোটের আগে বিজেপি বিরোধী জোটে গেলে নির্বাচনের পর ইডি সিবিআইয়ের ধাক্কা সামলাতে হতে পারে৷ আবার মায়াবতী মনে করছেন, তাঁর দলের এখন যা সাংগঠনিক অবস্থা তাতে বিজেপি কিংবা এসপি-কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে গেলে বিএসপির অবশিষ্ট ভোটও হাতছাড়া হয়ে যাবে৷ তখন দল টিকিয়ে রাখাই সমস্যা হয়ে যাবে৷ এখনই দল প্রায় উঠে যাওয়ার জোগার হয়েছে৷ মূলত এই চিন্তাতেই বিএসপি সুপ্রিমো একলা চলো নীতি নিয়েছেন৷