জেল থেকে ভোটারদের উদ্দেশে খোলা চিঠি মণীশ শিশোদিয়ার 

দিল্লি, ৫ এপ্রিল – অরবিন্দ কেজরিওয়ালের পর এবার জেলবন্দি দিল্লির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ শিশোদিয়া জেল থেকে দিল্লিবাসী ও তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্রের ভোটারদের উদ্দেশে খোলা চিঠি লিখলেন। এই চিঠিতে কেজরিওয়াল মন্ত্রিসভার প্রাক্তন শিক্ষা ও আবগারি মন্ত্রী মণীশ শিক্ষা ক্ষেত্রে তাঁর অবদান স্মরণ করিয়েছেন। তিনি আরও লেখেন, ‘খুব শীঘ্রই আমি জেল থেকে বেরিয়ে আসব। এক বছরের বেশি হয়ে গেল আমাকে অন্যায়ভাবে জেলে আটকে রাখা হয়েছে।’  

আপের তরফে কেজরিওয়াল, শিশোদিয়ার এইসব বার্তাকে দলকে উদ্বুদ্ধ রাখার চেষ্টা বলে ব্যাখ্যা করছে। যদিও রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, আম আদমি পার্টির অনেক নেতাই ১৬ এপ্রিলকে সামনে রেখে তৈরি হচ্ছেন। ওইদিন কেজরিওয়ালের কারাবাসের বর্তমান মেয়াদ শেষ হবে। তারপর তিনি নিম্ন আদালতে জামিনের আবেদন করবেন। যদিও ইডি ইতিমধ্যে আদালতে জানিয়ে রেখেছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে তারা ফের হেফাজতে নিতে পারে। তিনি তদন্তে অসহযোগিতা করেছেন। নতুন করে তাঁকে জেরা করার দরকার হতে পারে।

১৬ এপ্রিল তারিখটি আপের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ওইদিনই স্পষ্ট হতে পারে, কেজরিওয়ালের কারাবাস বা ইডি হেফাজতে থাকার মেয়াদ আর কতটা দীর্ঘায়িত হতে পারে। সেই মতো ঠিক হবে কেজরিওয়াল দল ও সরকারের শীর্ষ পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন কি না। বিজেপির বক্তব্য, আপে ক্ষমতা দখলের লড়াই শুরু হয়েছে। কেজরিওয়াল স্ত্রীকে দল ও সরকারের মাথায় বসালে দলের অভ্যন্তরে বিদ্রোহ ঘনিয়ে উঠতে পারে।


নিজে সরে দাঁড়ালেও কেজরিওয়াল যে স্ত্রী সুনীতাকে এগিয়ে রেখেছেন তা অনেকটাই স্পষ্ট। দল ও সরকারের যাবতীয় বার্তা তিনি তাঁর স্ত্রীয়ের মাধ্যমে পাঠাচ্ছেন। দলীয় দফতরে স্বামীর চেয়ারে বসেই নিয়মিত সাংবাদিক বৈঠক করছেন সুনীতা। আপ বিধায়কেরা এক বাক্যে সুনীতার নেতৃত্বও মেনেও নিয়েছেন। দলের সাংসদ সঞ্জয় সিং আবগারি মামলায় জামিন পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে মুখ্যমন্ত্রীর বাংলোয় আপ বিধায়কদের সুনীতা তলব করেছিলেন । 

দলে কেজরিওয়ালের পরই গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকেন মণীশ এবং সঞ্জয়। আবগারি মামলায় ইডি ও সিবিআই প্রথম গ্রেফতার করে মণীশকে। তিনি দফায় দফায় জামিনের আবেদন করলেও তা মঞ্জুর হয়নি। অন্যদিকে, ছয়মাসের মাথায় জামিন পেয়েছেন সঞ্জয়। সুপ্রিম কোর্টে ইডি তাঁর জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেনি। এরপর থেকেই জল্পনা ছড়াতে থাকে কেজরিওয়াল সরে গেলে মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তাঁর স্ত্রী সুনীতা নাকি সঞ্জয়। এই জল্পনার মধ্যেই মণীশশিশোদিয়া মন্ত্রী থাকাকালীন দিল্লিবাসীর জন্য তাঁর অবদান স্মরণ করিয়ে খোলা চিঠি লিখলেন।  তাঁর দাবি, খুব শীঘ্রই তিনি কারাগারের বাইরে আসবেন।