দিল্লি, ২৩ ফেব্রুয়ারি– বিরোধী জোটসঙ্গী হলেও বাংলায় কংগ্রেসকে তেমন কোনও জায়গা দিতে রাজী নয় শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ঘোষণা করেছেন কোনওভাবেই দুইয়ের বেশি আসন ছাড়া হবে না হাত শিবিরকে৷ এই বার্তা বিরোধী জোট ভাঙণের ইঙ্গিত, বলা শুরু করেছিলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা৷ যদিও এখন ইন্ডিয়া ভেঙে বেরিয়ে যাওয়ার সরাসরি ঘোষণা করেননি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী৷ অন্যদিকে, লোকসভার আগে বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে যেমন জোট করতে মরিয়া কংগ্রেস৷ তেমনই আবার নিজেদের আসনের দাবি থেকেও সরতে নারাজ হাত শিবির৷ স্বাভাবিকভাবেই কংগ্রেসের প্রস্তাব মানা সম্ভব হচ্ছে না তৃণমূলের পক্ষে৷
আর তাই রাজ্যের শাসকদলের কাছে ফের জোট করতে জেয়ে নতুন বার্তা পাঠিয়েছে কংগ্রেস৷ কিন্তু জোট করতে চেয়ে নতুন যে প্রস্তাব হাত শিবিরের তরফে পাঠানো হয়েছে, সেটাও কার্যত নাকচ করে দিল তৃণমূল৷ কংগ্রেস সূত্রের খবর, আসনরফা নিয়ে তৃণমূলকে নয়া প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে দলের তরফে৷ প্রস্তাব অনুযায়ী, বাংলার ৪২ আসনের মধ্যে ৬টি আসন চাইবে কংগ্রেস৷ তৃণমূল আগে জানিয়ে দিয়েছিল, বাংলায় কোনওভাবেই দুইয়ের বেশি আসন ছাড়া হবে না হাত শিবিরকে৷ কিন্ত্ত কংগ্রেস সূত্রের দাবি, বাংলায় আসনের বদলে অন্য রাজ্যে যদি তৃণমূলকে কিছু আসন দেওয়া হয়, তাহলে বাংলায় পাঁচ আসন ছাড়তে রাজি হয়ে যেতে পারে তৃণমূল৷
মমতার সঙ্গে জোটের আশা ছাড়তে রাজি নয় কংগ্রেস৷ শুক্রবারও কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ তেমন ইঙ্গিত দিয়েই জানালেন, ‘মমতার সঙ্গে কথাবার্তা চলছে৷ দরজা বন্ধ হয়নি৷ বারবার বলে এসেছি, এখনও বলছি৷ কোনও কিছুই চূড়ান্ত হয়নি, তবে চলছে৷ বাংলায় যে ছয়দিন ছিলাম, বারবার বলেছি৷ আপনারা শোনেনি বা বিশ্বাস করেননি৷ সপা, আপ নিয়েও আপনারা একই কথা বলেছেন, সমঝোতা হয়ে গেল তো? তৃণমূলের কে কী বলছে জানি না, ওদের সুপ্রিম নেত্রী বারবার বলে এসেছেন উনি ‘ইন্ডিয়া’র সঙ্গে আছেন৷ বিজেপিকে রুখতে সর্বতোভাবে লড়াইয়ে আছেন৷ এরপরও আপনাদের এত প্রশ্ন কেন?’
তবে আসন ভাগাভাগী নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে তৃণমূল দলীয় সূত্র কিন্ত্ত কংগ্রেসের দাবি অস্বীকার করছে৷ নাম জানাতে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা জানাচ্ছেন, কংগ্রেসের এই ধরনের বক্তব্যের কোনও সারবত্তা নেই৷ বাংলার কোনও আসনে কংগ্রেসের জেতা এটা স্বপ্নেও ভাবা যায়না৷ তবে যদি কোনও রফা হয়, সেটা দ্রুত জানিয়ে দেওয়া হবে৷”
তৃণমূল নেতার ওই বক্তব্য নিয়ে আবার পাল্টা প্রশ্ন করা হয় জয়রাম রমেশকে৷ এই বক্তব্যের পরও কংগ্রেস আশাবাদী৷ জয়রাম রমেশ বলছেন, ‘তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এটাও বলেছেন যে, তৃণমূল ইন্ডিয়া জোটের অবিচ্ছেদ্য শরিক৷ রাজনীতিতে এই ধরণের কথা চলতেই থাকে৷ রাজনীতিতে দু-দিন অনেক বড় সময় হয়৷’