মোদি পরাস্তে ইন্ডিয়া জোটের ভরসা একমাত্র মমতাই, দলে স্পষ্ট বার্তা খাড়গের

দিল্লি, ১৬ জানুয়ারি– ২৬ টি রাজনৈতিক দল এক ছাতার তলায় এসে তৈরি করে ‘ইন্ডিয়া’ জোট৷ যার লক্ষ্য দেশকে মোদি মুক্ত করা৷ জোট সৃষ্টির প্রাক্কাল্য থেকেই যাঁর গুরুত্ব সবথেকে বেশি দেখা গিয়েছিল তিনি হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মোদি পরাস্তে গঠিত জোটে মমতার প্রয়োজন কতটা তা এবার স্বীকার করে নিলেন স্বয়ং কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেই৷
বঙ্গে কংগ্রেস বা অন্যান্য দলগুলির সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে মমতার অবস্থান জেনেও মমতাকে গুরুত্ব দিয়ে চলেছে কংগ্রেস৷ তাই যেনতেন প্রকারে বঙ্গে জোট দ্রুত সেরে ফেলতে চায় হাইকমান্ড৷ এমনকী ইন্ডিয়া জোটের চেয়ারম্যান তথা কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের স্পষ্ট বার্তা, বিজেপিকে হারাতে হলে মমতার কৌশল হাতছাড়া করা যাবে না৷ বঙ্গে বিজেপিকে রোখা তো বটেই, মমতাকে কংগ্রেসের দরকার জাতীয় ক্ষেত্রে তাঁর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও গুরুত্বের কারণেই৷ দলের বৈঠকে খাড়গে সেই কথাই বুঝিয়ে দিয়েছেন বলে খবর৷ তাঁর কথার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে এক এআইসিসি নেতার বক্তব্য, খাড়গেজি খুব অল্প কথায় বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, বিজেপি-বিরোধী লড়াইয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁদের সঙ্গে চাই জাতীয় লড়াইয়ে মমতার রাজনৈতিক কৌশলকে দরকার বলে৷
শনিবার ইন্ডিয়া জোটের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন খাড়গে৷ আর দলীয় নেতৃত্বকে তিনি এই বার্তা দিয়েছেন ঠিক তার একদিন আগে৷ শুক্রবার দলের প্রায় সাডে় তিনশো কো-অর্ডিনেটরকে নিয়ে দিল্লিতে বুথস্তরে ভোট প্রস্তুতির প্রাথমিক বৈঠক করেন খাড়গে৷ সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেই দলের সভাপতি কো-অর্ডিনেটরদের স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, বিজেপিকে হারাতে হলে বঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জোট করতেই হবে৷ বৈঠকে যে মন্তব্যের পর তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতা করার আসন সংখ্যা নিয়ে সংশয় থাকলেও, জোট যে কার্যত নিশ্চিত তা আবারও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে প্রদেশ নেতৃত্বের কাছে৷ একই সঙ্গে খাড়গের নির্দেশ, ইন্ডিয়া-জোটে তাদের শরিক তৃণমূলকে বঙ্গে কোনওভাবে চটানো যাবে না৷ জোট-ধর্মের মর্যাদা রেখেই সেই নির্দেশ পালন করতে হবে৷ যে কেন্দ্রে যিনিই প্রার্থী হোন, তাঁর বা তাঁর টিমের সঙ্গে কো-অর্ডিনেশন বা সমন্বয়ের কাজ করবেন কংগ্রেসের নির্দিষ্ট ওই নেতাই৷
কংগ্রেস ইতিমধ্যে তাদের সংসদীয় দলনেত্রী সোনিয়া গান্ধির সম্মতি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ৬ আসনের প্রস্তাব পাঠিয়েছে৷ তৃণমূল নেতৃত্বও বুঝিয়ে দিয়েছে, দলনেত্রী আগেই কংগ্রেসের জেতা ২ আসন ছাড়ার কথা বলেই রেখেছেন৷ এর বাইরে নতুন করে আসন সংখ্যা নিয়ে আর দর কষাকষির জায়গা নেই৷ যদি তা হয়ও, সে সব করতে হবে একেবারে শীর্ষস্তরে, অর্থাৎ সোনিয়া-মমতা কথোপকথনেই তা একমাত্র সম্ভব৷
এর মধ্যেই কংগ্রেসের একটি স্তরে প্রশ্ন উঠেছে যে, জোট কি আদৌ হবে! কারণ হাতে সময় কম৷ এখনও যেভাবে দর কষাকষি চলছে তাতে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে না তো? তবে এসবের মধ্যেই খাড়গের এই তাৎপর্যপূর্ণ বক্তব্য প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের সামনে এখনও জোট ফর্মুলাতেই সিলমোহর দিয়ে রাখল৷