‘দুঃখিত গোটা মালদ্বীপ’, ভারতের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট

ভারতের বয়কটে রেকর্ড পতন ব্যবসা
মালে, ৯ মার্চ– মসনদে বসেই চিন প্রেম দেখাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন মলদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু৷ সেই প্রেম প্রকাশ পায় ভারতকে মলদ্বীপ থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার হুমকীর মাধ্যমে৷ আর এতে শুধু দু’দেশের সম্পর্কে পতন নামে নি নেমেছে ধস নেমেছে মলদ্বীপের পর্যটনশিল্পেও৷ যার ফলে ধুকতে হচ্ছে সে দেশের সাধারণ মানুষকে৷

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে করা তাঁদের মন্তব্যের পর থেকেই ভারতজুড়ে শুরু হয় ‘বয়কট মালদ্বীপ’৷ রেকর্ড হারে ভারতীয় পর্যটক কমতে শুরু করে পড়শি দেশে৷ আর এসবের পরই মুইজ্জুকে দুষলেন মালদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাশিদ৷ ক্ষমা চাইলেন ভারতীয়দের কাছেও৷

সম্প্রতি মালদ্বীপের এক সংবাদমাধ্যমে সেখানকর পর্যটক মন্ত্রকের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে৷ সেখানে দেখা যাচ্ছে, ২০২৩ সালের মার্চ মাসে মলদ্বীপে ভারতীয় পর্যটক ছিল ৪১ হাজার ৫৪ জন৷ ২০২৪ সালে ২ মার্চ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে সেই সংখ্যা কমে দাঁডি়য়েছে ২৭ হাজার ২২৪ জন৷ এক বছরে মলদ্বীপে ভারতীয় পর্যটক কমেছে ১৩ হাজার ৮৩০ জন৷ শুধু তা-ই নয়, গত বছর একই সময়ে মলদ্বীপে পর্যটন থেকে আয়ে ভারতের অবদান ছিল ১০ শতাংশ৷ এ বছর সেই পরিমাণ কমেছে ৪ শতাংশ৷
এখন ভারতেই রয়েছেন নাশিদ৷ মালদ্বীপের সংবাদ মাধ্যমে ব্যবসা কমে যাওয়া প্রকাশিত খবর প্রসঙ্গে নাশিদকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, মালদ্বীপের সকল মানুষের হয়ে ভারতের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি৷ মুইজ্জুর ‘চিনপন্থী’ মনোভাব ও মোদিকে করা তাঁদের মন্তব্যের জেরে ভারতীয় পর্যটক কমে যাওয়ার কারণে মার খাচ্ছে দ্বীপরাষ্ট্রটির পর্যটনশিল্প৷ নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে অর্থনীতিতে৷ যা নিয়ে উদ্বিগ্ন মহম্মদ নাশিদ৷ সংবাদ সংস্থা এএনআইকে তিনি জানিয়েছেন, ‘এই ঘটনা মালদ্বীপের উপর প্রভাব ফেলছে৷ আমি খুবই উদ্বিগ্ন৷ যা ঘটেছে তার জন্য মালদ্বীপের মানুষ খুবই দুঃখিত৷ আমি সকলের হয়ে ভারতের কাছে ক্ষমা চাইছি৷ আমরা চাই ভারতীয়রা ছুটি কাটাতে আমাদের দেশে আসুন৷ আমাদের আতিথেয়তায় কোনও খামতি হবে না৷’


ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করা নিয়ে মুইজ্জুরের বিরুদ্ধে তোপ দেগে নাশিদ ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘যখন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট চেয়েছিলেন ভারতীয় সেনা দেশ থেকে চলে যাক তখন জানেন ভারত কী করেছিল? ভারত কিন্ত্ত তাদের শক্তি প্রদর্শন করেনি৷ বরং তারা মালদ্বীপের সরকারকে বলেছিল, ঠিক আছে এটা নিয়ে আমরা আলোচনায় বসতে পারি৷’ বেজিং-মালে প্রতিরক্ষা চুক্তি কথার খারিজ করে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় মুইজ্জু কিছু সরঞ্জাম কিনতে চেয়েছিলেন৷ বিশেষ করে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট৷ তাঁর মনে হয়েছে, দেশের জন্য এগুলোর আরও প্রয়োজন রয়েছে৷ কিন্ত্ত বন্দুকের নল দিয়ে কখনও সরকার চালানো যায় না৷”
বলে রাখা ভালো, ১০ মার্চে মালদ্বীপে মোতায়েন ভারতীয় সেনাকে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷ যা শেষ হবে ১০ মে৷ ভারতীয় সেনাকর্মীরা সাদা পোশাকে মালদ্বীপে ঢুকছে এমন দাবি করে ‘চিনপন্থী’ প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু জানিয়ে দিয়েছেন, ১০ মে-র পর আর কোনও ভারতীয় সেনাকর্মীকেই ঢুকতে দেওয়া হবে না দ্বীপরাষ্ট্রে৷ এমনকী, সাদা পোশাক পরেও নয়৷