রেলকর্মীর তৎপরতায় এড়ানো গেল বড়সড় দুর্ঘটনা। গুজরাতের কিম রেল স্টেশন লাগোয়া রেললাইনে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটানোর ছক কষেছিল অজ্ঞাতপরিচয় এক বা একাধিক দুষ্কৃতী। সেই জন্য খুলে নেওয়া হয়েছিল লাইনে থাকা ফিশ প্লেট এবং চাবি। এক রেলকর্মী বিষয়টি আঁচ করে কন্ট্রোল রুমে খবর দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেন।
রেল সূত্রের জানা গিয়েছে, কিম রেলস্টেশনের কাছে অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজন রেললাইনের ফিশ প্লেট ওচাবি খুলে ট্র্যাকে রেখেছিলেন। সেই কারণে এখানে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে ট্র্যাক মেরামতের পর আবার ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।
এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো, ফিশ প্লেটের মাধ্যমে দুটি ট্র্যাক যুক্ত করা হয়। ফিশ প্লেট খুলে দিলে ট্র্যাক আলাদা হয়ে যায়। ফলে সেই লাইনের ওপর দিয়ে ট্রেন গেলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যে কোনও বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। অতীতে ফিশ প্লেট ঠিক না থাকার কারণে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে।
পশ্চিম রেলওয়ের ভাদোদরা বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ফিশ প্লেট এবং চাবি আপ লাইন থেকে সরিয়ে ওই ট্র্যাকেই রাখা হয়েছিল। সুরাটের কোসাম্বা এবং কিম রেলওয়ে স্টেশনগুলির মধ্যে পরিদর্শনের সময়, কি-ম্যান সুভাষ কুমার দেখতে পান, ট্র্যাকের ফিশ প্লেটটি সরানো হয়েছে এবং চাবিগুলি ফেলে দেওয়া হয়েছে।
সুভাষ কুমার তৎক্ষণাৎ কন্ট্রোল রুমে খবর দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেন। তারপর ট্র্যাক মেরামত করা হয়। শনিবার ভোর ৫টা ২৭ মিনিট নাগাদ এ ঘটনা ঘটে। সেই সময় ওই লাইন দিয়ে বান্দ্রাগামী গরিব রথ এক্সপ্রেস আসার কথা ছিল। মাঝপথেই থামানো হয় ট্রেনটিকে।
বেশ কিছুদিন ধরেই যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ্যে আসছে। রেলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। কোথাও দেখা যাচ্ছে রেললাইনে ভারী কিছু ফেলে রাখা হচ্ছে, আবার কোথাও রেলের ট্র্যাকের ক্ষতি করা হচ্ছে।
কখনও রেলওয়ে ট্র্যাকে সিলিন্ডার পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে, আবার কখনও কাঠ বা সিমেন্টের স্ল্যাব রেল ট্র্যাকে রাখা হচ্ছে। উত্তর প্রদেশের কানপুরে রেলওয়ে ট্র্যাকে সিমেন্টের স্ল্যাব বসানো হয়েছিল। এর ফলে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ট্র্যাক। সময়মতো তথ্য পাওয়ায় বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় কালিন্দী এক্সপ্রেস।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছর ধরেই বার বার দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে রেল। জুন মাসে শিলিগুড়ির কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। ৮ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন বেশ কয়েকজন। তারপর ঝাড়খণ্ডের চক্রধরপুরে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে হাওড়া-মুম্বই মেল। মৃত্যু হয় বেশ কয়েকজনের। চণ্ডীগড়-ডিব্রুগড় এক্সপ্রেসও দুর্ঘটনায় কবলে পড়েছে।