করোনা আক্রান্তের সংখ্যা গত দু’সপ্তাহ ধরে ভারতে হু হু করে বাড়ছে। রবিবারও দেশজুড়ে এই বৃদ্ধি অব্যাহত। আর ভারতের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা সবথেকে বেশি মহারাষ্ট্রে। শুধুমাত্র এই একটা রাজ্যেই যা আক্রান্তের সংখ্যা, তা চিনের মোট আক্রান্তের থেকেও বেশি।
জানা গিয়েছে, রবিবার মহারাষ্ট্রে নতুন করে ৩,০০৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন নভেল করোনাভাইরাসে। ফলে এই রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৫,৯৭৫। মৃতের সংখ্যা ৩,০০০-এর বেশি। মারাঠা প্রদেশে আক্রান্তের সংখ্যা চিনকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। চিনে এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৮৩,০৩৬। তার থেকে বেশি আক্রান্ত ভারতের একটি রাজ্যেই।
মহারাষ্ট্রের মধ্যে আবার সবথেকে খারাপ অবস্থা বাণিজ্যনগরী মুম্বইয়ের। এই অবস্থায় কী ভাবে সংক্রমণ কমানো যায়, তা ভেবেই পাচ্ছেনা উদ্ধব ঠাকরে সরকার। ভারতে সংক্রমণ ছড়ানোর শুরু থেকেই এই রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা সবথেকে বেশি হারে বেড়েছে। সেই ট্রেন্ড এখনও বজায় রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গোটা দেশে লকডাউন উঠে গেলেও এই রাজ্যে পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে তা এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে।
রবিবারও ২,০০০-এর বেশি আক্রান্তের খবর পাওয়া গিয়েছে দেশজুড়ে। তামিলনাড়ুতে ১,৫১৫ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১,৬৬৭। ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এই রাজ্যে। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৬৯।
দিল্লিতে রবিবার নতুন করে ১,২৮২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। রাজধানীতে কোভিড রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৮ হাজারের বেশি। মৃতের সংখ্যাও ৮১২ হয়েছে। গুজরাতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯,৫৯২। মৃতের সংখ্যা ১,২১৯।
রবিবার উত্তরপ্রদেশে একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিতীয় সর্বাধিক হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ৪৪৯। ফলে বর্তমানে উত্তরপ্রদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ১০,৫৩৬। গত শুক্রবার এই রাজ্যে ৫০২ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। খুব বেশি পিছিয়ে নেই পশিমবঙ্গও। এই রাজ্যে পরপর তিনদিন আক্রান্তের সংখ্যা সবথেকে বেশি হয়েছে। রবিবার নতুন করে ৪৪৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে বর্তমানে এই রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৮,১৮৭।
এই মুহূর্তে ভারতে সবথেকে বেশি আক্রান্ত যে পাঁচ রাজ্যে রয়েছে সেগুলি হল মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়, দিল্লি, গুজরাত ও রাজস্থান। এই পাঁচ রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ভারতের ৭০ শতাংশ। ভারতের মোট মৃত্যুরও প্রায় ৭৮ শতাংশ এই পাঁচ রাজ্যেই হয়েছে।
লকডাউন থেকে বেরনোর জন্য কেন্দ্রের তরফে আনলক ফেজ ১ ঘোষণা করার পর থেকেই দ্রুত গতিতে বাড়তে শুরু করেছে আক্রান্তের সংখ্যা। কারণ বেশিরভাগ পরিষেবা শুরু হয়েছে। সোমবার থেকে রেস্তোরাঁ, শপিং মল ও ধর্মীয় স্থান খুলছে। সরকারি অফিসও খুলছে। ফলে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ রাস্তায় বেরবেন। তার জেরে আগামী কয়েক দিন আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।