দিল্লি, ২ ফেব্রুয়ারি– সে কোন গভীর ক্ষত হোক বা পোড়া ক্ষত, কেটে বা ছডে় যাওয়া, ডায়াবেটিসের কারণে হওয়া ক্ষত বা দুর্ঘটনার জখম তারজন্য লাগবে মাত্র ৭ দিন৷ ক্ষত শুকিয়ে ক্ষত গায়েব৷ কোনও ওষুধের বিজ্ঞাপন নয়, এমনটাই বলছেন স্বয়ং এইমসের চিকিৎসকরা৷ তারা এমন এক যন্ত্র বানিয়ে ফেলেছেন যা বিশেষ উপায় ব্যবহার করে কোনও গভীর ক্ষত সারিয়ে তুলবে বহু তাড়াতাড়ি৷
চোট যদি শরীরে ভেতরে হয় তাহলে তা সহজে ঠিক হয় না৷ সার্জারি করতে হলেও পোস্ট-সার্জারি পর্বে যন্ত্রণা, সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে৷ এইসব সমস্যার সমাধানেই এবার নতুন রকম যন্ত্র বানালেন এইমসের চিকিৎসকরা৷ ‘স্কুল অফ ইন্টারন্যাশনাল বায়োডিজাইন’-এর সাহায্যে এই চোট সারানোর যন্ত্র তৈরি করেছে দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্স৷ অন্তত ১০০ জন রোগীর উপর এই যন্ত্রের প্রয়োগে সাফল্য এসেছে বলে দাবি৷ এইমসের ট্রমা কেয়ার সেন্টারের অধ্যাপক সুষমা সাগর জানাচ্ছেন, নেগেটিভ প্রেসার ও অক্সিজেন সরবরাহ করে ক্ষত সারানো হবে বিশেষ উপায়৷ কম্বিনেশন থেরাপি করবে এই যন্ত্র৷ এর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বলে দাবি করা হয়েছে৷
ডাক্তারবাবুরা বলছেন, শরীরের কোনও অংশে আঘাত পেলে সেখানে ব্লাড ক্লট করে যায় অনেক সময়৷ ফলে সেই জায়গায় যন্ত্রণা হতে থাকে৷ চামড়া ছিঁডে় বা কেটে গিয়ে সেখানে সংক্রমণের কারণে ক্ষত আরও বাডে়৷ ওষুধ দিয়ে সেখানে ট্রিটমেন্ট করেন ডাক্তারবাবুরা৷ কিন্ত্ত শুধু ওষুধ বা ইঞ্জেকশনে ক্ষত সারতে সময় লাগে৷ অপারেশন করতে হলে বা সেলাই করলেও ক্ষত শুকোতে দেরি হয়৷ তার উপর সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে৷ কিন্ত্ত এই যন্ত্র ব্যবহার করলে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকবে না বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা৷
এই পদ্ধতিতে প্রথমে ক্ষতের উপর ফোমের মতো আস্তরণ দেওয়া হবে৷ তার উপর একটি ফিল্ম দিয়ে জায়গাটা আটকে দেওয়া হবে৷ এর সঙ্গে জোড়া থাকবে নল, যার সঙ্গে যন্ত্রটি সংযুক্ত থাকবে৷ ওই নল দিয়ে ক্রমাগত নেগেটিভ প্রেসার দেওয়া হবে ক্ষতে ও রস টেনে নেওয়া হবে৷ তারপর ক্রমাগাত অক্সিজেন পাঠানো হবে ক্ষতস্থানে৷ এই অক্সিজেন ত্বকের ঢুকে রক্ত চলাচল ঠিক করবে, ক্ষতস্থান তাড়াতাডি় শুকিয়ে যাবে৷ বড় ক্ষত নিরাময়ে এই যন্ত্র দারুণ কার্যকর হতে পারে, বার বার ড্রেসিং করার ঝামেলাও থাকবে না৷ তবে এইমস জানাচ্ছে, এই ধরনের যন্ত্র এখনও বাজারে পাওয়া যাবে না৷ হাসপাতালেই এই যন্ত্র দিয়ে চিকিৎসা করবেন ডাক্তাররা৷