• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

দেশের ৪০০ জেলায় জীবনযাত্রা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক করার ইঙ্গিত

২১ দিনের লকডাউনের ফলে ভারতের আর্থিক অবস্থার চরম অবনতি হয়েছে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের পক্ষে জানানো হয়েছে চলতি আর্থিক বর্ষে আর্থিক বৃদ্ধির হার ১.৫৮ শতাংশের বেশি হবে না।

বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনা করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। (File Photo: Twitter / @PIB_India)

করোনা মোকাবিলায় মানুষের চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করতে সরকারের পক্ষে লাল, হলুদ ও সবুজ জোন ঘোষণা করা হচ্ছে। ১১ এপ্রিল বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনার পর লকডাউন জারি রাখা হলেও আর্থিক কারণে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার পক্ষপাতী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

তিনি জানান, করোনা সংক্রমণ যেখানে বেশি সেখানে লাল এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। যে অঞ্চলে অপেক্ষাকৃত সংক্রমণ কম সেখানে হলুদ ও যে সকল অঞ্চলে সংক্রমণ নেই সেসকল অঞ্চলে জীবন যাত্রা স্বাভাবিক অর্থাৎ সোশ্যাল ডিসটান্সিং বজায় রেখে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উৎপাদন কাজ শুরুর ব্যবস্থা করা হবে তবে লকডাউন জারি থাকায় অযথা বাইরে বেরোনো বা ঘোরাঘুরির কোনও সুযোগ থাকছে না।

দেশের এমন চারশো জেলায় করোনার কোনও সংক্রমণ ধরা পড়েনি। এমন অঞ্চলগুলি সবুজ জোনের মধ্যে গণ্য হবে। অন্যদিকে যেসকল অঞ্চলে মাত্র পনেরো বা তার কম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়বে এবং করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে না, সেখানে যাত্রী পরিবহণ সীমিত সংখ্যায় চলবে, কৃষি কাজে কোনও বাধা দেওয়া হবে না।

যেসকল অঞ্চলে পনেরোর বেশি সংখ্যায় সংক্রমণ এবং আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে সেখানে লাল জোন ঘোষণা করা হবে। সে সব অঞ্চলে সকল কাজকর্ম বন্ধ রাখা হবে বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

বর্তমান পরিস্থিতিতে জান ও জাহান দুই-ই রক্ষা করতে হবে। ২১ দিনের লকডাউনের ফলে ভারতের আর্থিক অবস্থার চরম অবনতি হয়েছে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের পক্ষে জানানো হয়েছে চলতি আর্থিক বর্ষে আর্থিক বৃদ্ধির হার ১.৫৮ শতাংশের বেশি হবে না। বৃদ্ধির হার আশা করা হয়েছিল ৪.৫-৫.০ শতাংশ।

যে সকল অঞ্চলে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ শুরু করা হবে সেগুলি হল কৃষি ও পরিকাঠামোর মতো জরুরি ব্যবস্থা। কারণ পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা সরকারকে পরিকাঠামোর অপ্রতুলতার বিষয়টি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। ফসল কাটার সময় এসে যাওয়ায় কিভাবে অবস্থার মোকাবিলা করা হবে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্র দফতরের পক্ষে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, বিমান চলাচল ফার্মাসিউটিক্যাল, শিল্প, নির্মাণ ইত্যাদির ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার কথা চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে সোশ্যাল ডিসটান্সিং ব্যবস্থা বজায় রেখে।

এদিকে দেশে গত চব্বিশ ঘন্টায় ৯০৯ করোনায় আক্রান্ত এবং ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পক্ষে জানানো হয়েছে এপর্যন্ত প্রায় দুই লাখ লোকের পরীক্ষা করা হয়েছে তার মধ্যে ৪.৩ শতাংশের দেহে করোনাভাইরাস পাওয়া গিয়েছে। গত পাঁচ দিনে গড়ে ১৬ হাজার মানুষের পরীক্ষা করা হয়েছে, সেখানে ৫৮৪ জনের দেহে সংক্রমণ ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য দফতরের যুগ্ম সচিব লব আগরওয়াল।

আক্রান্ত ৮৩৪৬ জনের মধ্যে ২০ শতাংশকে আইসিইউতে রাখা জরুরি। ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, পাঞ্জাব, কর্নাটক এবং তেলেঙ্গানায় ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন জারি রাখার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।

শনিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর প্রায় চার ঘন্টা ধরে আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এপর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে কুড়ি হাজারের বেশি মানুষের। ত্রিশ দিনের পর আমেরিকায় লকডাউন প্রত্যাহার করলে মৃত্যুর সংখ্যা দুই লাখের বেশি হবে বলে মন্তব্য করেছেন সে দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ইতালিতে এপর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৯,৪৬৮ এবং স্পেনে মৃত্যু হয়েছে ১৬,৩৫৩ জনের। বিশ্বে ১.৭৭ মিলিয়ন আক্রান্ত এবং মৃত্যু হয়েছে ১.০৮ লাখ।