অর্থনৈতিক সংকট জঁকিয়ে বসেছে দেশজুড়ে। দেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার নেমে এসেছে ৫ শতাংশে। এবার এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমােহন সিং। গােটা ঘটনার জন্য নরেন্দ্র মােদির সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন তিনি।
মনমােহনের মতে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে চুড়ান্ত অব্যবস্থার জন্য আজ এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। রবিবার টুইটারে একটি ভিডিও বার্তা কংগ্রেসের তরফে প্রকাশ করা হয়েছে। সেই ভিডিওতে মনমােহন বলেছেন, প্রথম ত্রৈমাসিকে জিডিপি বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে। এটা আসলে দীর্ঘস্থায়ী মন্দারই ইঙ্গিত বহন করছে। যদিও দ্রুত গতিতে উন্নতির সব রকম সম্ভাবনাই রয়েছে ভারতের। কিন্তু বিভিন্ন ক্ষেত্রে মােদির সরকারের চূড়ান্ত দ্ব্যবস্থাই আজ এ ধরনের মন্দা ডেকে এনেছে।
এখানেই থেমে থাকেননি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্যে শােনা গিয়েছে আশঙ্কার কথাও। তিনি বলেছেন, এভাবে চললে বড় ধরনের বিপর্যয় খুব শীঘ্রই নেমে আসবে। এভাবে কোনও দেশ চলতে পারে না। সে কারণে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আর্জি জানিয়ে বলেন, প্রতিহিংসার রাজনীতি ছেড়ে সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষের পরামর্শ নেওয়া হােক। তাহলেই মনুষ্যসৃষ্ট এই সঙ্কট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। সঠিক বিচার এবং বিবেচনার মাধ্যমে এই সঙ্কট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
সম্প্রতি বিভিন্ন ক্ষেত্র যেমন গাড়ি শিল্পেও চাকরি হারিয়েছেন কয়েক লক্ষ মানুষ। এই নিয়ে নরেন্দ্র মােদি সরকারকে এদিন বিধতে ছাড়েননি মনমােহন। তিনি বলেন, ‘মােদি সরকারের ভুল নীতির জন্যই এই বেকারত্ব বাড়ছে। তিন লক্ষ মানুষ শুধু গাড়ি শিল্পে কাজ হারিয়েছেন। অন্যান্য ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। সাধারণ কর্মীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।
এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, গ্রামাঞ্চলে আয় কমেছে সাধারণ মানুষের। ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না কৃষক। দেশের পরিস্থিতি এই মুহূর্তে ভয়ঙ্কর। যে মূল্যবৃদ্ধির হার কমা নিয়ে বড়াই করে মােদি প্রকার এর কোনও মুল্য নেই। কৃষিজীবী মানুষকে চরম মূল্য চোকাতে হচ্ছে। দেশের ৫০ শতাংশ মানুষের ওপর দারিদ্র চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনই এক অর্থনৈতিক সঙ্কটময় মুহূর্তে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রকে ৭৬ লক্ষ কোটি টাকা দিতে রাজি হয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
দেশকে বড় ধরনের অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রেহাই দিতে যে টাকা রাখা হয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কে তাতে কেন্দ্র ভাগ বসানােয় ইতিমধ্যে মােদি সরকারকে সমালােচনার মুখে পড়তে হয়েছে। এবার সমালােচনার সেই সুর শােনা গেল দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যে এখানেই শেষ নয় দেশের প্রতিষ্ঠানগুলির স্বায়ত্ত্বশাসনের উপরও যে আঘাত নেমে এসেছে তারও সমালােচনায় সরব হয়েছেন মনমােহন।