• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

নেতা-মন্ত্রীদের হোয়াটসঅ্যাপ ট্যাপ হচ্ছে !

ফাটল ধরেছে হােয়াটঅ্যাপের সুরক্ষা বলয়ে। গােপন ছিদ্রপথে ব্যক্তিগত তথ্য চলে যাচ্ছে দুষ্ট চক্রের হাতে।

প্রতিকি ছবি (Photo: iStock)

ফাটল ধরেছে হােয়াটঅ্যাপের সুরক্ষা বলয়ে। গােপন ছিদ্রপথে ব্যক্তিগত তথ্য চলে যাচ্ছে দুষ্ট চক্রের হাতে। কথােপকথন, শেয়ার করা ছবি, ভিডিও-অডিও, সবই বেহাত হয়ে যাচ্ছে এক লহমায়। আর হ্যাকারদের নিশানায় রয়েছে ভারতের সাংবাদিক, রাজনীতিক, আইনজীবী, সমাজকর্মীদের মতাে বিশেষ কিছু পেশার মানুষজন।

সুরক্ষা বলয় ভেঙে হ্যাকারদের বিশেষ ‘সফটওয়্যার’-এর ঢুকে পড়ার ঘটনা স্বীকার করেছে হােয়াটঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ। পুরাে ঘটনায় অভিযােগের আঙুল উঠছে ইজরায়েলি সংস্থা এনএসও-র দিকে, আন্তর্জাতিক দুনিয়ার যারা পরিচিত ‘সাইবার অস্ত্রের ডিলার’ হিসেবে। এই সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করেছে হােয়াটঅ্যাপ।

কীভাবে হােয়াটসঅ্যাপের সুরক্ষা বলয় ভাঙছে ইজরায়েলের ওই সংস্থা সেটা এখনও স্পষ্ট নয় সাইবার বিশেষজ্ঞদের কাছে। তবে মনে করা হচ্ছে, হােয়াটঅ্যাপের ‘ভয়েস কলিং’ ফিচার ব্যবহার করে সুরক্ষার বাঁধুনি ভেঙে চলেছে হ্যাকাররা। কোনও একটি নির্দিষ্ট মােবাইল সেটে ‘ভয়েস কল’ করে ওই নজরদারি সফটওয়ার ‘ইনস্টল করে দিচ্ছে হ্যাকাররা। ফলে ওই নির্দিষ্ট মােবাইল সেট থেকে যাবতীয় গােপন ও ব্যক্তিগত তথ্য পাচার হয়ে যাচ্ছে হ্যাকারদের কাছে।

হােয়াটস্অ্যাপের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘ভারতের সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা মূল নিশানা। তাছাড়াও রাজনীতিবিদ, সমাজকর্মীরাও রয়েছেন। অন্তত ১৪০০ জন ইতিমধ্যেই আক্রান্ত। গােপনে তাদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে নিচ্ছে হ্যাকারদের সফটওয়্যার। এখনও অবধি আক্রান্তদের নাম ও মােবাইল নম্বর আমরা জানতে পারিনি। তবে খুব দ্রুত হােয়াটসঅ্যাপের সুরক্ষা কবচ মজবুত করার চেষ্টা চলছে।

এই মুহূর্তে সারা পৃথিবীতে ১৫০ কোটিরও বেশি হােয়াটস্অ্যাপ ইউজার হয়েছেন। তথ্য চুরির বিষয়টা সামনে আসার পরই ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেছে হােয়াটঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে এই ‘নজরদারি সফটওয়্যার’-এর হামলা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়াও শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।

হােয়াটস্অ্যাপের মালিক ফেসবুক আগেই জানিয়েছিল এই মেসেজিং অ্যাপে বলা কথা, পাঠানাে সব লেখা, অডিও বা ভিডিও প্রেরক ও প্রাপক বাদে তৃতীয় কোনও ব্যক্তির পক্ষে দেখা-শােনা সম্ভব নয়। গােপনীয়তার সেই সুরক্ষাকবচ যে মােটেই নিশ্চিদ্র নয়, কার্যত সেটাই আজ কবুল করে নিল ফেসবুক। হােয়াটঅ্যাপের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, হামলার ধরন দেখে এটা নিশ্চিত, আড়ি পাতার সফটওয়ারটি তৈরি করেছে ইজরায়েলের সাইবার সুরক্ষা সংস্থা এনএসও গ্রুপ এবং কিউ সাইবার টেকনােলজি।

সাইবার বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই সংস্থাই একসময় বানিয়েছিল কুখ্যাত ‘পেগাসাস’ সফটওয়ার, যা যে কোনও মােবাইলে আড়ি পাততে সক্ষম। নির্দিষ্ট মােবাইল সেটে একবার জমিয়ে বসতে পারলেই এই সফটওয়্যার সেই ব্যক্তির অবস্থান, তার যাবতীয় জরুরি ও ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে নিতে পারে নিমেষের মধ্য। পেগাসাসের বৈশিষ্ট্য হল এরা গ্রাহককে এক্সপ্লয়েট লিঙ্কে ক্লিক করতে বাধ্য করে। একবার এই লিঙ্কে ক্লিক করলে সেই গ্রাহকের মােবাইলের সুরক্ষা কবচ তাসের ঘরের মতাে ভেঙে পড়ে। ছবি, অডিও-ভিডিও, লােকেশন তাে বটেই গােপনীয় পাসওয়ার্ডও হাতে এসে যায় হ্যাকারদের।