পাটনা, ১৫ এপ্রিল– ‘অব কি বার ৪০০ পার’ এই স্লোগানই এখন গেরুয়া শিবিরের হাথিয়ার৷ এরই মাঝে নির্বাচনী প্রচারে বিজেপি নেতাদের মুখে উঠে এসেছে সংবিধান বদলের কথাও৷ কিন্তু সেই কথা যে বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি সুপ্রিমো লালু প্রসাদ যাদব খুব ভালো ভাবে নেননি তাঁর প্রমাণ পাওয়া গেল তাঁর হুঁশিয়ারিতে৷ লালুর হুঁশিয়ারি, ‘এটা বাবা সাহেব আম্বেদকরের তৈরি সংবিধান৷ কোনও আতিপাতি বাবার বানানো নয়৷ খবরদার, যদি এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয় সেক্ষেত্রে জনতা ছেড়ে কথা বলবে না৷ দেশের জনতা ওদের চোখ উপড়ে নেবে৷ ওঁরা চাইছে সংবিধান বদলে দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিতে৷’
প্রসঙ্গত, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে সংবিধান বদলের কথা প্রথম বলেন, বিজেপি নেতা অনন্ত হেগড়ে৷ তিনি বলেছিলেন, সংবিধানের প্রস্তাবনা সংশোধনের জন্য, সংসদের উভয় কক্ষে বিজেপির দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাগবে৷ তাই বিজেপিকে বিপুল ভোটে জেতানোর আর্জি জানান হেগড়ে৷ এরপর সেই একই কথা শোনা যায় রাজস্থানের বিজেপি প্রার্থী জ্যোতি মৃধার মুখে৷ তিনি বলেন, দেশের স্বার্থে আমাদের কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়৷ সেটার জন্য সাংবিধানিক পরিবর্তনও দরকার৷ এর জন্য এটি লোকসভা ও রাজ্যসভা উভয় কক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা দরকার৷ লোকসভায় বিজেপির বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে৷ কিন্ত্ত এতদিন রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল না৷ এবার তৃতীয়বারের মতো লোকসভায় শক্তিশালী সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হবে এনডিএকে৷ যদিও এই সংবিধান বদলের সম্ভাবনার কথা খারিজ করে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, দেশের সংবিধান বদলের ক্ষমতা কারও নেই৷
লালুর হঁশিয়ারি থেকে বাদ গেলেন না প্রধানমন্ত্রী মোদিও৷ সোমবার সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে লালু প্রসাদ হুঁকার দিয়ে বলেন, ‘আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে রীতিমতো ভয়ে রয়েছেন নরেন্দ্র মোদি-সহ বিজেপি নেতারা৷ ওঁরা বুঝতে পারছেন আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ওঁদের হার হতে চলেছে৷ যার ফলেই ৪০০ পারের দাবি তুলছে বিজেপি৷ বিপুল ভোট চেয়ে মানুষের কাছে আবেদন জানাচ্ছে যাতে সংবিধান বদল করতে পারে৷’ এরপরই অতীত স্মরণ করিয়ে লালু বলেন, “নরেন্দ্র মোদির মনে থাকবে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত দেশে সংরক্ষণ নীতি নিয়ে পুনরায় চিন্তাভাবনা করার দাবি করেছিলেন৷ সেই সময়ে দেশের জনতা বিজেপিকে ভোটের বাক্সে জবাব দিয়েছিল৷ এবারও সেই একই হাল হবে বিজেপির৷’
পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রী কেন সেই নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না যারা সংবিধান বদলের কথা বলছেন৷