করােনাকালে লাদাখ নিয়ে লাগাতার জলঘােলা করে চলেছে চিন। এদিকে লাদাখের পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার মস্কোয় বৈঠকে বসতে চলেছেন ভারত ও চিনের বিদেশমন্ত্রীরা। তার আগেই তাৎপর্যপূর্ণভাবে লাদাখ নিয়ে মুখ খুললেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
এদিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পূর্ব লাদাখের অবস্থাকে ‘অত্যন্ত গুরুতর’ বলে মন্তব্য করেন বিদেশমন্ত্রী। এর প্রভাব নয়াদিল্লি বেজিং সম্পর্কেও নিশ্চিতভাবে পড়বে বলে মনে করেন জয়শঙ্কর। উত্তেজনা প্রসমনে ও তলানিতে ঠেকা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মেরামতিতেও রাজনৈতিক স্তরে আলােচনা প্রয়ােজন বলে মনে করেন তিনি। এছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনে দু দেশকেই উদ্যোগী হতে হবে বলে জানান বিদেশমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার মস্কোয় হতে চলেছে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের সম্মেলন। অংশ নিচেছন আট দেশের বিদেশমন্ত্রীরা। সম্মেলনের ফাঁকে চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে বৈঠকে বসবেন জয়শঙ্কর। তার আগে সােমবার নয়াদিল্লিতে এক আলােচনাচক্রে বিদেশমন্ত্রী মন্তব্য যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল।
এদিন বিদেশমন্ত্রী বলেন, সীমান্ত সমস্যা দ্বপাক্ষিক সম্পর্ক থেকে আলাদা নয়। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এই মন্তব্য থেকে পরিষ্কার মস্কোতে দু’পক্ষের আলােচনার মূল বিষয় হতে চলেছে পূর্ব লাদাখের পরিস্থিতি।
প্রসঙ্গত, গত ৪ মে থেকে পূর্ব লাদাখের প্যাংগং গালওয়ান এলাকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় শক্তি বাড়ায় চিনা সেনা। এরপরই সামনে আসে ১৫ জুন গালওয়ানে সংঘর্ষে ভারতের ২০ জওয়ানের মৃত্যুর খবর। যদি বেজিং তাদের ক্ষতির কথা স্বীকার করেনি। যদিও মার্কিন গােয়েন্দা সংস্থার দাবি ছিল, অন্তত ৩৫ চিনা সেনার মৃত্যু হয়েছে ওই সংঘর্ষে। এই প্রসঙ্গেই জয়শঙ্কর এমন মন্তব্য করেন।
লাদাখের এই অঞ্চল নিয়ে চিন ভারত উত্তেজনা কমার কোনও লক্ষণই এখনও দেখা যাচ্ছে না। দফায় দফায় সেনা পর্যায়ের মিটিংয়েও বরফ গলেনি। সাময়িকভাবে উত্তেজনা কিছুটা কমলেও পুরােপুরি থামেনি। সম্প্রতি চিনা প্ররােচনা বেড়েছে বলেও অভিযােগ করেছে ভারত। ফলে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। কিছুটা সরে যাওয়ার পরও ফের ২৯-৩০ আগস্ট রাতে এবং ৩১ সেপ্টেম্বর দিনের বেলা অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালায় পিএলএ।
এমনকি গতকাল সােমবার চিনা বাহিনী গুলি চালিয়ে ভারতীয় সেনার রুিদ্ধে গুলি চালানাের অভিযোগ আনে। অভিযােগ অস্বীকার করে ভারতীয় সেনা। বিদেশমন্ত্রীর মতে, এই ধরনের পরিস্থিতি পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক। তাঁর মতে, দুটি দেশের পারস্পরিক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তি হল, সীমান্ত শান্তি। সীমান্ত পরিস্থিতি যদি প্রতিকূল হয় তাহলে সামগ্রিকভাবেই সম্পর্কে সেই প্রভাব পড়বেই।