• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

কেরলের সোনাকাণ্ড: কূটনৈতিক চ্যানেলকে কাজে লাগিয়ে পাচার হয়েছিল ২৩০ কেজি সোনা!

ঠিক কত কেজি সোনা কূটনৈতিক রক্ষাকবচের আড়ালে পাচার হয়েছে কেরলের তিরুঅনন্তপুরমে এই নিয়ে কেরল জুড়ে জল্পনার অন্ত নেই।

কেরলের সোনাপাচার কাণ্ডের অভিযুক্ত সরকারি আমলা স্বপ্না সুরেশ। (File Photo: Twitter/@SriSubodhKmr)

ঠিক কত কেজি সোনা কূটনৈতিক রক্ষাকবচের আড়ালে পাচার হয়েছে কেরলের তিরুঅনন্তপুরমে এই নিয়ে কেরল জুড়ে জল্পনার অন্ত নেই। সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর উপদূতাবাসের মাধ্যমে কেরলের তিরুঅনন্তপুরমে পাচার হওয়া সোনার পরিমাণ কি শুধু ৩০ কেজি? প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীরা প্রায় নিশ্চিত গত এক বছরে কমপক্ষে ২৩০ কেজি সোনা পাচার হয়েছে এই কুটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে।

তদন্তকারীরা সেই সোনা উদ্ধারের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই তদন্ত চলাকালীন আমিরশাহীর দূতাবাসের এক কর্মীর দেশে ফিরে যাওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। নতুন মোড় নিয়েছে কেরলের সোনা পাচারচক্রের তদন্তে। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, এই ঘটনায় দুবাইয়ে এক ব্যক্তি গ্রেফতার হয়েছে। তাকে শীঘ্রই ভারতে আনা হবে। পাচারকাণ্ডে ধৃত স্বপ্না সুরেশের মোবাইল কললিস্ট থেকে কেরলের এক মন্ত্রীর নামও উঠে আসছে। তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

এই পাচার দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। ১৩টি এরকম কনসাইনমেন্ট আমিরশাহী থেকে ভারতে এসেছে। কুটনৈতিক রক্ষাকবচ থাকার জন্য সেগুলি চেকিংই হয়নি। এরকম ৭০ কেজি সোনা এভাবেই পাচার হয়ে গিয়েছে। গত বছরে এম ১৩টি ব্যাগ এসেছে। কূটনৈতিক রক্ষাকবচ থাকায় সেগুলি বিমানবন্দরে চেকিং হয়নি। তার মধ্যে কয়েকটির ওজন ৭০ কেজি পর্যন্ত ছিল।

শুধুমাত্র ২৫ জুন থেকে ৩ জুলাইয়ের মধ্যে ওই কূটনৈতিক চ্যানেলকে কাজে লাগিয়ে তিনটি ব্যাগ এসেছে। কখনও সেগুলি আমিরশাহীর ডেপুটি কনসাল জেনারেলের নামে, কখনও বা ওই অফিসের কোনও আধিকারিকের নামে। ফলে ওই ব্যাগগুলি চেকিং করা হয়নি, কারণ কূটনৈতিক রক্ষাকবচ ছিল।

যেদিন ৩০ কেজি সোনা পাওয়া যায় ব্যাগ থেকে সেদিন এই ব্যাগ খোলার আগে বিদেশমন্ত্রকের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। যেসব আধিকাকিদের নামে ব্যাগগুলি এসেছিল, সেইসব আধিকারিককে তদন্তের জন্য ডেকে পাঠানো হচ্ছে। কনসাল জেনারেলকেও একাধিকবার ডাকা হয়েছে তদন্তের জন্য। রবিবার দুই অভিযুক্ত স্বপ্না সুরেশ ও সরিতকে নিয়ে একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে গোয়েন্দারা।

এই ৩০ কেজি সোনা পাচারের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের দফতরের এক আধিকারিকের নাম উঠে এসেছে। সরিত নামে ওই আধিকারিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বরখাস্ত করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর প্রাক্তন প্রধান সচিব এম শিবশঙ্করকে।

একটি সংস্থার প্রভাবশালী মহিলা স্বপ্না সুরেশও গ্রেফতার হয়েছে। তদন্তে নেমেছে একাধিক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এনআইএ গ্রেফতার করেছে মোট ১৩ জনকে। এরই মধ্যে ফয়সাল ফরিদ নামে আমিরশাহীর দূতাবাসের কর্মী কিভাবে দেশে ফিরে গেল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

তবে, গোয়েন্দারা জানতে পেরছে ফয়সাল ফরিদ দুবাই থেকে গ্রেফতার হয়েছে। ফয়সালকে ভারতে প্রত্যর্পণ করা হবে বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে। এই তদন্তের ক্ষেত্রে ফয়সাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগেই এই ব্যক্তির নামে রুকর্নার নোটিশ জারি করার জন্য ইন্টারপোলকে জানিয়েছিল এনআইএ।

কিন্তু প্রশ্ন এত বিপুল পরিমাণ সোনা কোথায় পাচার হল? রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে চিরুনি তল্লাশি চলছে। স্বপ্না সুরেশের দুটি ফ্ল্যাটে গোয়েন্দারা দফায় দফায় তল্লাশি চালায়। কোঝিকোড়ের একটি সোনার দোকান থেকে শনিবার ১০ কেজি সোনা উদ্ধার করা হয়েছে।