তিরুবন্তপুরম, ১ সেপ্টেম্বর– নতুন প্রজন্মের কাছে বিয়ে হল ‘ইউজ অ্যান্ড থ্রো’-এর মতো! তাদের কাছে স্ত্রী হল যেচে ঝামেলা ডেকে আনার নামান্তর। সম্প্রতি এক ব্যক্তির বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন নাকচ করে এমনই দাবি করেছে কেরল হাইকোর্ট ।
কেরলের বাসিন্দা ৫১ বছরের এক ব্যক্তি সম্প্রতি স্ত্রীর থেকে বিচ্ছেদ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। ২০০৯ সালে বিয়ে হয় তাঁর। স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ৩ জন সন্তান রয়েছে। কিন্তু ২০১৭ সাল থেকে তিনি অন্য এক মহিলার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তারপরেই স্ত্রীর বিরুদ্ধে বৈবাহিক নিষ্ঠুরতার অভিযোগ তুলে বিচ্ছেদ চেয়ে প্রাথমিকভাবে পারিবারিক আদালতের দ্বারস্থ হন ওই ব্যক্তি। কিন্তু তাঁর প্রতি স্ত্রীর নিষ্ঠুরতার কোনও প্রমাণ না মেলায় তাঁর আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত।
এরপর একই দাবি নিয়ে কেরল হাইকোর্টে আপিল করেন তিনি। গত ২৪ অগস্ট সেই মামলার শুনানিতে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন আবারও খারিজ করে দেয় কেরল হাইকোর্টের বিচারপতি এ মহম্মদ মুস্তাক এবং সোফি থমাসের ডিসিশন বেঞ্চ। নিজেদের রায়ে আদালত জানিয়েছে, নতুন প্রজন্ম বিয়ে জিনিসটাকে ‘খারাপ’ হিসাবে দেখে। তারা লিভ-ইন সম্পর্কে যেতে বেশি আগ্রহী। এই ব্যাপারে সামাজিক অবক্ষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আদালত।
নির্দেশিকায় দাবি করেছে আদালত ‘আগে স্ত্রী শব্দটিকে বলা হত চিরকালীন বুদ্ধিমান বিনিয়োগ। এখন তা বদলে দাঁড়িয়েছে সেধে বিপদ ডেকে আনা’ । জানা গেছে, ওই ব্যক্তির স্ত্রী এবং মা কেউই তাঁর বিবাহ বিচ্ছেদ চান না। তাঁর স্ত্রীর দাবি, সব ভুলে স্বামীকে ফিরে পেতে প্রস্তুত তিনি।
আদালত নির্দেশিকায় আরও জানিয়েছে, ‘ইউজ অ্যান্ড থ্রো-এর সংস্কৃতি আমাদের বৈবাহিক জীবনকেও প্রভাবিত করছে। লিভ-ইন সম্পর্ক বাড়ছে, যেখানে বনিবনা না হলেই গুড বাই বলে দেওয়া যায়। বর্তমানের এই প্রথায় বিভিন্ন স্বার্থপর এবং তুচ্ছ কারণ, অথবা বিবাহ বহিৰ্ভূত সম্পর্কের জন্য সন্তানদের কথা ভুলে গিয়ে বিয়ের মতো একটা পবিত্র বন্ধন ভেঙে ফেলছে লোকে।’
যখন বিবাহবিচ্ছিন্ন পুরুষ-মহিলা, একলা সন্তান, এবং বিবাদরত দম্পতির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি হয়ে যাবে সমাজে, তখন তা নিঃসন্দেহে আমাদের সামাজিক জীবনে বিপরীত প্রভাব ফেলবে, সমাজের অগ্রগতি থমকে যাবে, জানিয়েছে আদালত।