কেজরিওয়ালের জেল হেফাজতের মেয়াদ আবার বাড়ল ১৪ দিন

দিল্লি , ২৩ এপ্রিল – দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের জেল হেফাজতের মেয়াদ আবার বাড়ল। মঙ্গলবার এই নির্দেশ দেয়  দিল্লির একটি আদালত।আগামী ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। দিল্লির তিহার জেলই আপাতত কেজরিওয়ালের ঠিকানা।  কেবল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী নয়, আবগারি মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া কে কবিতাকেও ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তাঁরা  দুজনেই আগামী ৭ মে পর্যন্ত জেলে থাকবেন।  এদিকে সোমবারই আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, এইমসের চিকিৎসক ঠিক করবেন, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর ইনস্যুলিন প্রয়োজন কিনা। রাতেই কেজরিওয়ালকে ইনস্যুলিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এইমসের চিকিৎসকরা ।
 
গত ২১ মার্চ ইডির হাতে গ্রেপ্তার হন আপ প্রধান। ইডি হেফাজত থেকে তাঁকে পাঠানো হয় তিহার জেলে।  কেজরিওয়াল ১ এপ্রিল থেকে তিহাড়ে বন্দি।গ্রেপ্তারির বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সেখানেও মেলেনি স্বস্তি । শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়, কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তারি নিয়ে পরবর্তী শুনানি হবে ২৯ এপ্রিল বা তার পর। শুনানির আগে অবশ্য এই গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে ইডির কাছে জবাব তলব করে সুপ্রিম কোর্ট। ২৪ এপ্রিলের মধ্যে শীর্ষ আদালতের কাছে নিজের বক্তব্য পেশ করতে হবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে।
 
তবে শীর্ষ আদালত সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতেই থাকতে হবে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে। সেই মেয়াদ ফুরনোর দিনই দিল্লির রাউস অ্যাভেনিউ কোর্টে কেজরির জামিনের আবেদন নিয়ে শুনানি হয়। সেখানে আদালতের নির্দেশ, আরও ১৪ দিন জেলেই বন্দি থাকবেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। অর্থাৎ লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় দফায়ও জেল থেকে বেরতে পারবেন না কেজরি। যদিও এদিন আদালত নির্দেশ দিয়েছে, জেলে পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখতে হবে কেজরিওয়ালের জন্য। দরকার পড়লে পরামর্শ নিতে হবে এইমসের চিকিৎসকদের থেকেও।
 
শুধু কেজরিওয়াল নয়, আবগারি মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া কে কবিতাকেও ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে রাউস অ্যাভেনিউ কোর্ট। তেলেঙ্গানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কেসিআর কন্যার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল ইডি। আপাতত তাঁকেও ৭ মে পর্যন্ত থাকতে হবে তিহার জেলে।
 

এদিকে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের রক্তে শর্করার মাত্রা ৩২০-তে পৌঁছে যাওয়ায়  তাঁকে জেলেই ইনসুলিন দেওয়া হয়েছে। জেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, সোমবার রাতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর রক্তে শর্করার মাত্রা ৩২০-তে পৌঁছয়। তারপরই তাঁকে ইনসুলিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত কয়েক দিন ধরেই কেজরিওয়ালের শারীরিক অসুস্থতা ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে। আম আদমি পার্টির তরফে বার বার অভিযোগ করা হচ্ছে, কেজরিওয়ালের রক্তে শর্করার মাত্রা প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই বেশি। কিন্তু তাঁকে ইনসুলিন দেওয়া হচ্ছে না। একই অভিযোগ করতে শোনা যায়  কেজরিওয়ালকেও।

 রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি থাকায় ইনসুলিন নেওয়া প্রয়োজন, অথচ জেলে যথাযথ চিকিৎসা পাচ্ছেন না। বার বার বলা সত্ত্বেও তাঁকে ইনস্যুলিন দেওয়া হয়নি। এই অন্যদিকে তিহার কর্তৃপক্ষ দাবি করে, মুখ্যমন্ত্রী ইনস্যুলিন চাননি।  জেলের নিয়ম হল বন্দিকে নিয়মিত খাওয়া সব ওষুধ সরবরাহ করা। ইনস্যুলিনও তার মধ্যে পড়ে। অভিযোগ তুলে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতের দ্বারস্থ হন আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আইনজীবী। আপ নেতা আবেদনে জানান , ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাঁকে পারিবারিক চিকিৎসকের সঙ্গে প্রতিদিন কথা বলতে দেওয়া হোক। সোমবার আদালত তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। তবে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য দিল্লির এইমস-কে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালতের নির্দেশের কয়েক ঘণ্টা পরই জেলে কেজরিওয়ালের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখে ইনসুলিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।