দিল্লি, ১৯ ফেব্রুয়ারি– ষষ্ঠবারের ডাকও এড়ালেন আপ প্রধান তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল৷ সোমবারও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের মুখোমুখি হচ্ছেন না দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরববিন্দ কেজরিওয়াল৷ তবে শুধু ইডির ডাকই নয়, আগেই এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টে সশরীরে হাজিরার আদেশও এড়িয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী৷
এর
আগের ৫ বারের ডাক নানা অছিলায় এড়িয়েছেন কেজরি৷ এবার আপ সূত্রে বলা হচ্ছে, ইডির তলব নোটিস বেআইনি৷ এই বিষয়ে আদালতে মামলা চলছে৷ মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ইডি একজন মুখ্যমন্ত্রীকে ডেকে পাঠাতে পারে না৷ অন্যদিকে, তদন্তকারীদের বক্তব্য, জেরা করার উপর আদালতের কোনও স্থগিতাদেশ নেই৷ দিল্লির মদকাণ্ডের চার্জশিটে মুখ্যমন্ত্রীর নাম রয়েছে৷ তদন্তের নিয়ম মেনেই তাঁকে ডাকা হচ্ছে৷
প্রসঙ্গত, গত বছর অক্টোবর মাস থেকে ইডি এ পর্যন্ত ছয়বার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে তলব করেছে৷ পঞ্চম তলবি নোটিসের বিরোধিতা করে কেজরিওয়াল দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে মামলা করলে বিচারক তাঁকে সশরীরে এসে নিজের বক্তব্য জানাতে বলে৷ গত শনিবার তাঁর আদালতে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল৷ কিন্ত্ত শনিবার আদালতেও যাননি আম আদমি পার্টির সুপ্রিমো৷ ওই দিন দিল্লি বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী নিজেই নিজের সরকারের উপর আস্থা প্রস্তাব এলে তা পাশ করিয়ে অভিযোগ করেছেন, সংখ্যা গরিষ্ঠ আপ সরকারকে ভাঙতেই কেন্দ্রীয় সরকার ইডি-সিবিআইকে দিয়ে হেনস্থা করছে৷
রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে কেজরিওয়ালের সিদ্ধান্ত নিয়ে৷ বারে বারে তদন্তকারীদের এডি়য়ে তিনি নিজের সর্বনাশ ডেকে আনছেন বলেই আলোচনা শুরু হয়েছে তাঁর নিজের দল ও দলের বাইরে৷ তার অবস্থা শেষে ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনের মতে হতে চলেছে বলেও জোর জল্পনা৷ আসলে আপ সুপ্রিমোর আইনি পরামর্শদাতারা তাঁকে বুঝিয়েছেন, তাঁর দশা হতে পারে ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনের মতো৷ জমি কেলেঙ্কারির মামলায় সরেনকে ইডি জেরা করার পর গ্রেফতারের কথা জানায়৷ মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা রাজভবনে ছোটেন৷ সেখানে সরেন রাজ্যপালের হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দেন৷ গ্রেফতারির আগে সরেনও বারে বারে ইডিকে এডি়য়ে যাচ্ছিলেন৷
এই পরিস্থিতিতে কেজরিওয়াল চাইছেন, লোকসভা ভোট পর্যন্ত ইডির থাবা থেকে নিজেরে রক্ষা করতে৷ কারণ, এই মুহূর্তে দলে তিনি ছাড়া প্রচারের গুরুত্বপূর্ণ মুখ কেউ নেই৷ প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া কুডি়বারের বেশি জামিনের আবেদন করেও ব্যর্থ হয়েছেন৷ হাইকোর্ট, সুপ্রিমকোর্টে গিয়েও সুরাহা মেলেনি তাঁর৷ দলের আর এক মুখ রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিংও জেলে৷ আবগারী মামলায় গ্রেফতার হওয়া সঞ্জয়কে চলতি মাসে ফের রাজ্যসভার সদস্য করেছে দল৷ কিন্ত্ত রাজ্যসভার সদস্য হিসাবে তাঁকে শপথ নেওয়ার অনুমতি দেননি চেয়ারম্যান তথা উপ রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়৷
আপের একটি সূত্রের খবর, কেজরিওয়াল আইন-আদালত করে সময় কাটানোর চেষ্টা করছেন৷ তিনি সত্যিই জেলে চলে গেলে স্ত্রী সুনীতাকে মুখ্যমন্ত্রী করা হতে পারে৷ কেজরির রাজনৈতিক আন্দোলনে অন্যতম প্রেরণাদাতা সুনীতা ইতিমধ্যে ভারত সরকারের চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন৷ তাঁরা স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই রাজস্ব বিভাগের উচ্চপদস্থ অফিসার ছিলেন৷ কেজরিওয়াল গ্রেফতারি এডি়য়ে স্ত্রীকে দল ও প্রশাসনিক কাজকর্ম নিয়ে প্রস্তুত করছেন৷